প্রতিদিন মেথি খেলে উপকার কি..? মেথির স্বাস্থ্য গুন কি...?
বাংলার ঘরে ঘরে অতি পরিচিত মসলা মেথি, বাঙ্গালীর পাঁচফোরন বলতে মেথি মিশ্রিত পাঁচ প্রকার মসলা বিশেষ কে বুঝেথাকে। ত্বকে যে ঘা, ফোড়া, গরমজনিত ত্বকের অসুখ হয়, মেথি অসুখগুলো দূর করে থাকে। বয়স বা বার্ধক্যকে দূরে ঠেলে দিয়ে তারুণ্যকে দীর্ঘস্থায়ী করতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে মেথি। গবেষণা করে দেখা গেছে, যে ডায়াবেটিক রোগীরা নিয়মিত মেথি খান, তাঁদের ডায়াবেটিসজনিত অসুখগুলো কম হয় এবং স্ট্রোক হওয়ার প্রবণতা তুলনামূলকভাবে কম। ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য মেথি শ্রেষ্ঠ পথ্য ঔষধ বলে বিবেচিত।
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে মেথি চিবিয়ে খেলে বা এক গ্লাস পানিতে মেথি ভিজিয়ে রেখে সেই পানি পান করলে শরীরের রোগ-জীবাণু থেকে মুক্তিমেলে, তাই মেথি নিয়ে অাজকের এই লেখা।
মেথি অামাদের শরীরের পরজীবী বিশেষত কৃমি দুর করে থাকে বলে বিবেচিত ।
মেথি নিয়মিত ব্যাবহার রক্তের চিনির মাত্রা কমে এছাড়া মেথি রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বা চর্বির মাত্রাও কমিয়ে থাকে। ডাক্তার ডায়াবেটিসের রোগী থেকে শুরু করে হৃদরোগ এর রোগী পর্যন্ত সবাইকে তাঁদের খাবারে মেথি রাখার পরামর্শ দিয়েথাকে। মেথির গুণাগুণ দেখলে একে অন্যতম স্বাস্থ্যগত সুপারফুড বলা চলে।
তবে চলুন এক নজর মেথির উপকারিতা জেনে নিন....
১. মেথিতে আছে প্রাকৃতিক ফাইবার বা তন্তু, যা ওজন কমাতে বেশ কার্যকর। দিনে দুই-তিনবার মেথি চিবাতে থাকলে বেশি না খেলেও পেট ভরা মনে হয়ে থাকে। যাঁরা ওজন কমাতে চান, তাঁরা প্রতিদিন মেথি কাজে লাগাতে পারেন।
২.এইতো শীত বাড়ছে সাথে বাড়ছে সর্দিকাশিও। নিয়মিত মেথি খেলে সর্দিকাশি থাকবে না, লেবু ও মধুর সঙ্গে এক চা-চামচ মেথি মিশিয়ে খেলে জ্বর পালাবে। মেথিতে মিউকিল্যাগ নামের একটি উপাদান আছে, যা গলাব্যথা সারাতে পারে। অল্প পানিতে মেথি সেদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে গড়গড়া করলে গলার সংক্রমণ দূর হয়।
৩. চুল পড়া ঠেকাতে মেথি খেলে উপকার পাওয়া যায়। মেথি সেদ্ধ করে সারা রাত রেখে তার সঙ্গে নারকেল তেল মিশিয়ে নিয়মিত মাথায় মাখলে চুল পড়া কমে এজন্য নারকেল তেলে মেথি মিশাতে দেখতে পাবেন অনেক বাসা-বাড়ীতে।বাজারে 'কুমারিকা'তেলে মেথি দেখেছেন নিশ্চই।
৪. অন্ত্রের নড়াচড়া বৃদ্ধি করে মেথি। যাঁদের পেট জ্বালা বা হজমে সমস্যা আছে, তাঁরা নিয়মিত মেথি খেতে পারেন। এতে ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে, যা শরীর থেকে ক্ষতিকর উপাদান দূর করে। মেথি ঝরানো পানি খেলেও হজমের সমস্যা দূর হবে। এমনকি পেপটিক আলসার সারিয়ে তুলতেও সাহায্য করে মেথি।
৫. রক্তে চিনির মাত্রা কমানোর অসাধারণ এক শক্তি থাকায় ডায়াবেটিস রোগের জন্য খুব ভালো একটি পথ্য মেথি। ডায়াবেটিস সারাতে মেথি ভূমিকা অতুলনীয়।
৬.মেথির তেতোঁ স্বাদের কৃমিনাশক নিয়মিত মেথি খেলে পেটে কৃমি হয় না। সেই সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ে।
৭. মেথি আয়রনসমৃদ্ধ হওয়ায় রক্তস্বল্পতা, অর্থাৎ অ্যানিমিয়া রোগের পথ্য হিসেবে কাজ করতে পারে। তাই রক্তাল্পতা জন্য মেথি উত্তম পথ্য।
৮. মাতৃদুগ্ধ বাড়াতে ওষুধের বিকল্প হলো মেথি। সদ্য মা হওয়া নারীর জন্য মেথি উপকারী হারবাল ঔষধ।
৯. ক্যানসার প্রতিরোধে কাজ করে মেথি, বিশেষ করে স্তন ও কোলন ক্যানসার প্রতিরোধের জন্য মেথি কার্যকর। মেনোপজ হলে নারীর শরীরে নানা ধরনের পরিবর্তন আসে। হরমোনের এই পরিবর্তনের কালে মেথি ভালো একটি পথ্য হিসেবে কাজ করে থাকে।
১০. মেথি পুরুষের শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে সক্ষম। মসলা জগতে এবং রূপচর্চায় এবং ঔষধের কাঁচামাল হিসেবে দিনে-দিনে মেথির চাহিদা বৃদ্ধিপাচ্ছে। অাপনার বাড়ীতে নিয়মিত রাখুন মেথি থেরাপি।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন