গাজা কি মাদক না কি ঔষধ...?
পৃথিবীতে সর্বকালের সেরা মাদক যা শতভাগ স্বাস্থ্যকর। এটা ব্যথানাশক ঔষুধ হিসেবেও দারুন কার্যকর। ইতিমধ্যে এই গাঁজার মধুর খোঁজ পেয়ে গেছেন ইউরোপের মারিজুয়ানা ফোরামে সদস্যরা। তার এই মধু পেতে ধরর্ণা দিচ্ছেন রিকোলাসের দরজায়।
চলতি বছরে গাজা নিয়ে বেশ কয়েকটি গবেষণা হয়েছে। এরমধ্যে এক গবেষণায় দেখা গেছে গাজা রক্তচাপ সুন্দরভাবে নিয়ন্ত্রন করতে এবং এইচআইভি প্রতিহত করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। শুধু তাই নয় কয়েক প্রকার ক্যান্সার নিরাময়েও পর্যন্ত গাজা ভালো ফল দেয়। বিশেষ করে যারা লিওকোমিয়ায় আক্রান্ত, তাদের চিকিৎসার জন্য দীর্ঘদিনই চিকিৎসকরা অনুমোদন সাপেক্ষে গাজা ব্যবহার করে আসছেন।
গাজা বৈধকরণে সবচেয়ে এগিয়ে আছে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ১৭টি রাজ্য। প্রাথমিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রে কলোরাডোতে প্রথম বৈধতা দেয়া হয়েছিল। এরপর কলোরাডোতে গাজা বৈধকরণের সফলতার পর অন্যান্য রাজ্যগুলোও ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে। এর বাইরে নতুন করে চিলি তাদের দেশ গাজাকে শুধু বৈধতাই দেয়নি, প্রতিটি নাগরিক সর্বোচ্চ পাঁচটি গাজা গাছ লাগাতে পারবে সেই অনুমোদনও দিয়েছে। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, প্রাচীন ভারতবর্ষের বিভিন্ন মিথ বা সাহিত্যে গাজার ব্যবহার দেখা যায়। কোথাও নেশাদ্রব্য হিসেবে গাজার ব্যবহার দেখা যায়নি। কিন্তু পরর্ব্তী সময়ে ভারতে কেমিক্যালজাত মাদকের ব্যবহার শুরু হওয়ার পর বিভিন্ন কারণে গাজাকেও মাদকের পর্যায়ভূক্ত করা হয় এবং ১৯৮৫ সালে আইন করে গাজাকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়।
নেশার জন্য গাঁজা গাছটি (Cannabis Sativa) কে আবিষ্কার করেন তা এখনো জানা যায়নি। তবে গাঁজার ব্যবহার যে অনেক আগে থেকেই চলে আসছে তাতে সন্দেহ নেই। সাধু সন্ন্যাসীরা গাঁজার দারুন ভক্ত। তান্ত্রিক যোগ সাধনার সাথে যারা জড়িত তাদের সাথে গাঁজার কলকি থাকেই। গাঁজা শুধু সাধু সন্ন্যাসীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, সাধারণ মানুষের কাছেও এটি ব্যাপক জনপ্রিয়।
গাঁজা, সাধারণত মারিজুয়ানা, গঞ্জিকা, গাঞ্জা, সিদ্ধি ইত্যাদি নামে পরিচিত, মূলত গাঁজা উদ্ভিদের এক ধরণের প্রস্তুতি যা সাইকোঅ্যাক্টিভ ড্রাগ এবং ঔষধ হিসেবে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে প্রস্তুত করা হয়। ফার্মাকোলজিক্যালি, গাঁজার প্রধান সাইকোঅ্যাক্টিভ উপাদান হল টেট্রাহাইড্রোক্যানাবিনল (টিএইচসি), এটি উদ্ভিদের ৪৮৩টি পরিচিত যৌগের ১টি,এছাড়াও ৮৪টি অন্যান্য ক্যানাবিনোয়েড্স রয়েছে, যেমন ক্যানাবিডিওল (সিবিডি), ক্যানাবিনল (সিবিএন), টেট্রাহাইড্রোক্যানাবিভারিন (টিএইচসিভি), এবং ক্যানাবিগেরো (সিবিজি)। গাঁজা সাধারণত ধূমপান, বাষ্পীকরণ, খাবারের মধ্যে মিশ্রণ, এবং নির্যাস হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
গাঁজা বা মারিজুয়ানার মধ্যেও আছে প্রকারভেদ। প্রকাশিত একটি রিপোর্টে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, এই মারিজুয়ানা মাদকের মধ্যে মেডিক্যাল মারিজুয়ানা ক্যানাবিডিওল বা সিবিডি মোটেই ক্ষতিকারক নয়।
ক্যান্সার, পক্ষাঘাত, অ্যালঝাইমার, পার্কিনসন্সের মতো রোগে চমৎকার কাজ দেয় সিবিডি। এর নিয়মিত ব্যবহার রোগীকে আরাম দেয় এবং তাকে এই ওষুধের প্রতি নেশাগ্রস্তও করে না। দীর্ঘ দিন ধরেই সিবিডির কার্যকরিতা নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা চালাচ্ছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিজ্ঞানীরা। অবশেষে এই সিদ্ধান্তে এসেছেন তারা।
তবে আগামী বছরে সিবিডি নিয়ে পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনার পরই বিশ্বজুড়ে চিকিৎসকদের তা ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
এদিনের রিপোর্টে ফেন্টানিল নামে একটি সিন্থেটিক ওপিওড বা ওষুধ ব্যবহারে চূড়ান্ত নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। আমেরিকায় এই ওষুধ নিয়ে বহু লোক
নেশাগ্রস্ত হয়ে মারা গিয়েছেন, অনেকে মৃত্যুমুখে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন