হাঁটুন সুস্থ থাকুন....!


হাঁটুন সুস্থ থাকুন গবেষকদের দাবি, যে সব মানুষের চলার গতি কম, তাদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। আবার যাদের চলার গতি একটু বেশি, তাদের হার্ট সবল। স্বাভাবিকভাবেই এমন মানুষের আয়ুও বেশি। আধুনিক জীবনে মানুষের ব্যস্ততা অনেক। এর জন্য খাওয়া দাওয়া হোক বা ঘুম, কোনো কিছুই আর ঘড়ির কাঁটা মেনে চলে না। এই অনিয়মিত জীবনযাপনই ডেকে আনছে বিপদ। যা প্রতিফলিত হচ্ছে মানুষের হাঁটাচলায়। জীবন থেকে প্রায় উধাও হয়ে যাচ্ছে হাঁটা। অল্প বয়সেই শরীরে জাঁকিয়ে বসছে প্রাণঘাতী সব রোগ। কম বয়সেই হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক বাড়ছে। গবেষকদের দাবি, অতিরিক্ত জাঙ্কফুড অল্প বয়সে মৃত্যু পর্যন্ত ডেকে আনতে পারে। তার অন্যতম কারণ হাঁটা কমিয়ে দেয়া। কারণ না হাঁটলে দ্রুত দুর্বল হতে থাকে হার্ট। প্রায় সাড়ে চার লাখ মধ্যবয়সী মানুষের ওপর গবেষণায় চালায় ইউরোপের হার্ট জার্নাল। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে আট হাজার মানুষের মৃত্যু হয় ১-২ বছরের মধ্যে। যার মধ্যে দেড় হাজারের বেশি মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এদের হাঁটাচলার গতি বেশ মন্থর ছিল। অনেকের আবার প্রথমে গতি ঠিক থাকলেও সময়ের সাথে সাথে তা কমে আসে। কিন্তু কতক্ষণ হাঁটতে হবে, কত দ্রুত হাঁটতে হবে, হাঁটার পর কী খেতে হবে? গবেষকদের দাবি, প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষকে দিনে কমপক্ষে ৪৫ থেকে ৬০ মিনিট হাঁটতেই হবে। দ্রুতগতিতে হাঁটলে প্রতি মিনিটে প্রায় ৬ ক্যালরি খরচ হবে। ৪৫ মিনিট এই গতিতে হাঁটলে শরীর থেকে প্রায় ২৫০ ক্যালরি পোড়ানো সম্ভব। হাঁটা শেষে একটু বিশ্রাম বা অল্প ফল খেলে শরীর সুস্থ থাকবে। এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই সময় মেনে, নির্দিষ্ট গতিতে হাটতে হবে। তাহলেই দীর্ঘদিন সুস্থ থাকবে হার্ট। সবাই জানেন একটি সুখী, সুস্থ শরীর মনের জন্য কোন ও না কোন ধরনের শরীরর্চ্চা প্রয়োজন। ব্যায়াম সে সঙ্গে সুমিত পানাহার হলো দীর্ঘ জীবনের রহস্য, শরীর মন তরতাজা রাখার রহস্য। আদর্শ ওজন বজায় রাখা সবচেয়ে বড় কাজ। এছাড়া আনন্দে কালক্ষেপনের একটি ভালো উপায় হলো ব্যায়াম করা। সহজ সরল একটি ব্যায়াম আছে। হাঁটা। কম পরিশ্রমে উপযুক্ত একটি ব্যায়াম সব বয়সের মানুষের জন্য। নিখরচায়, শরীরচর্চা। যেখানে সেখানে করা যায় এই শরীরচর্চা। লেকের পার ধরে যে পায়েচলা পথ সেই পথ ধরে হাঁটার মধ্যে কত আনন্দ। ঝিরি ঝিরি বাতাস, বন্ধুর সঙ্গে হাঁটতে বড় আনন্দ। এমনকি বাসার চারধারে যে ফুটপাত সেখানে দশমিনিট হাঁটলেও কম কি? ইদানীং গবেষকরা বলছেন হৃদযন্ত্র ও রক্তনালীর সুস্থাস্থ্যের জন্য হাঁটা, জগিং ও দৌড়ানোর সমান সুফল আনে। বস্তুত: কারো কারো জন্য হাঁটা এর চেয়েও ভালো ব্যায়াম। কারণ হাঁটলে শরীরের উপর চাপ পড়েনা। দৌড়ালে অনেক সময় হাড়ের গিটে ব্যথা হয়, আহত হয় পেশী। বয়স্কদের জন্য বেশ ঝুকিপূর্ণ কিন্তু হাঁটা-হাঁটি করে আহত হওয়ার কথা শোনা যায়না। বড় সহজ এই হাঁটা। বিশেষ কোন পোষাক পরার দরকার নেই, ঘেমে নেয়ে উঠার প্রয়োজন নেই। আরামে আয়েশেও হাঁটা যায় যত্রতত্র। সপ্তাহে ছয়দিন ৩০ মিনিট করে হাঁটাই যথেষ্ট। জগিং ও এরোবিকস এর মত কঠোর ব্যায়াম হার্টকে ঘোড়ার মত দৌড়াতে বাধ্য করে। রক্ত জোরে পাম্ল করতে থাকে। একপর্যায় পর্যন্ত এটি হিতকরী। তবে পেশি এত কঠোর শ্রম যেহেতু করে সেজন্য এর প্রয়োজন হয় প্রচুর অক্সিজেন। ব্যায়ামে তৈরী হয় ল্যাকটিক এসিড, অম্লতা রোধের জন্য চাই প্রচেষ্টা। ল্যাকটিক এসিড জমা হওয়াতে পেশী হয় শক্ত ও বেদনার্ত। হাঁটলে তেমন হয় না। হৃদপিণ্ড জোরে পাম্ব করে, বাড়ায় রক্তপ্রবাহ, তবে পেশীর উপর এত কঠোর প্রভাব ফেলেনা। শরীরে তৈরি হয় না এত ল্যাকটিক এসিড। তাই শরীরের উপর কম চাপ প্রয়োগ করেও রক্ত সংবহনতন্ত্রের উজ্জীবনে সাহায্য করে। দেহের সঞ্চিত মেদ অবমুক্ত হয়ে বিপাক হয়। শরীরের উপর যেহেতু এর চাপ কম সেজন্য যে কোনও কেউ পুরা সপ্তাহ ধরে হাঁটলেও খারাপ লাগেনা। অনেক অসুস্থ মানুষও হাঁটাকে ব্যায়াম হিসাবে গ্রহণ করতে পারেন। শুরু হোক ধীরে ধীরে। প্রথম দিন ১০ মিনিট থেকে ১৫ মিনিট। এরপর গতি বাড়ান, সময় বাড়ান। ২০ থেকে ৩০ মিনিট । এরপর শীতল হন ১০ মিনিট। ৫ থেকে ১০ মিনিটে ধীরে হেঁটে শীতল হন। ভীড-ভাট্টা, ব্যবহুল জিম থেকে নিখরচায় হাঁটা অনেক ভালো।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সিরকা বা ভিনেগার কি.. এর উপকারিতা কি...?

Mia Khalifa মিয়া খলিফা sex সমাচার

ত্রিফলার উপকার কি...?