পেটের বাড়তি চর্বি ভুড়ি কমাবার জন্যে রইলো কিছু কার্যকর টিপস চর্বির উপকার বা ক্ষতিকর দিগদিগন্ত.....
জীবনে একটি অমূল্য সম্পদ তাই সুন্দর এবং সুস্থ জীবন পেতেহলে কিছু নিয়ম মেনে চলতে পারলে বারতি কিছু দিন বেঁচে থাকার জন্য অাজকের লেখা। লেখাটি অাপনার জীবনের অালকে বারতি কিছুদিন বাঁচিয়ে রাখতে সহায়তা রাখবে বলে অামি মনেকরী।চর্বি কি...?চর্রি কত প্রকার...? চর্বিযুক্ত শরীর থেকে কি ভাবে মুক্তি পাওয়া সম্ভব...?
অনেকেই মনে করে রক্তে চর্বি থাকা মানেই ক্ষতি, তা কিন্তু নয়। স্বাভাবিক জীবন প্রক্রিয়ার জন্যই রক্তে চর্বি থাকা জরুরি। কিন্তু এগুলোর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে শরীর বাঁচাতে নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় রাখা দরকার।
চর্বি না তৈলাক্ত খাবার খাওয়া হয় তবে এই অতিরিক্ত চর্বি বা কোলেস্টেরল ধমনির দেয়ালে জমাট বেঁধে প্লাক তৈরি করে এবং রক্ত চলাচলে বাধা দেয়। ফলে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা যায়। যেমন : উচ্চ রক্তচাপ, হৃৎপিণ্ডের নানা ধরনের অসুখ, হার্ট অ্যাটাক ইত্যাদি।
সাধারণত দুই ধরনের কোলেস্টেরল আছে। একটি লো ডেনসিটি লাইপো প্রোটিন (এলডিএল) এবং অপরটি হাইডেনসিটি লাইপো প্রোটিন (এইচডিএল)।
এলডিএল ধমনির দেয়ালে ক্ষতিকর প্লাক তৈরিতে সাহায্য করে, তাই একে খারাপ কোলেস্টেরল বলা হয়। আর এইচডিএল ধমনির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় এলডিএল কোলেস্টেরলকে সরিয়ে দিতে সাহায্য করে। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। এ জন্য এটিকে ভালো কোলেস্টেরল বলা হয়। রক্তে এলডিএলের স্বাভাবিক মাত্রা হলো কমপক্ষে ১০০ মিলিগ্রাম পার ডিএল। এইচডিএলের স্বাভাবিক মাত্রা ৪০ থেকে ৬০ বা তার বেশি মিলিগ্রাম পার ডিএল।
রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে যে ধরনের খাবার খেতে হবে
✌ জলপাইয়ের তেল এবং জলপাইয়ের তৈরি খাদ্য
অলিভ অয়েল বা জলপাইয়ের তেলে রয়েছে মনোআনসেচুরেটেড ফ্যাটি এসিড ও ভিটামিন ই। গবেষণায় দেখা গেছে, মনো-আনসেচুরেটেড ফ্যাটি এসিড দেহের খারাপ কলেস্টেরল এলডিএলকে কমায় এবং ভালো কোলেস্টেরল এইচডিএলকে বাড়াতে সাহায্য করে। তাই যদি কেউ দেহের ভালো কোলেস্টেরলকে বাড়িয়ে খারাপ কোলেস্টেরলকে কমাতে চায়, তার জলপাইয়ের তেল বা জলপাইয়ের তৈরি খাবার অবশ্যই খেতে হবে।
প্রতিদিন খাবারে এক অথবা দুই চামচ জলপাইয়ের তেল সালাদ বা রান্নায় ব্যবহার করলে শরীরে মনো-আনসেচুরেটেড ফ্যাটি এসিডের চাহিদা পূরণ হবে।
✌সাক-সবজি
সবজি দেহের কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমায় এবং শক্তি জোগাতে সাহায্য করে। এ জাতীয় খাবার যেমন: শুষ্ক সোয়া প্রোডাক্ট, মটরশুটি, টফু ইত্যাদি।
✌ফ্যাট বা ননি ছাড়া দই এবং দুগ্ধজাত খাদ্য
যদি আপনি রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণকে কমাতে চান, তাহলে ননিযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার বাদ দিতে হবে। এর মানে এই নয় যে আপনি দুধের তৈরি খাবার খাবেন না। যদি দুগ্ধজাত খাবার না খাওয়া হয় তবে ক্যালসিয়াম, মিনারেল এ ধরনের প্রয়োজনীয় উপাদান থেকে শরীর বঞ্চিত হবে। এগুলো মানব শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের কার্যক্ষমতাকে সক্রিয় রাখে। দুধের তৈরি খাবার অস্টিওপোরোসিস বা হাড়ক্ষয় প্রতিরোধেও দারুণ সাহায্য করে।
তাই দুধের তৈরি খাবার খেতে হবে। তবে সেটি হবে ননি ছাড়া। ননিবিহীন দই বিশেষত প্রোটিনের জন্য খুব ভালো উৎস্য। এ ছাড়া এ থেকে আপনি পেতে পারেন ক্যালসিয়াম, ল্যাকটোব্যাসিলাস মাইক্রো-অর্গানিজম; যেগুলো কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে।
✌অ্যান্টি অক্সিডেন্ট-সম্বৃদ্ধ ফল ও সবজি
সব ধরনের সবজি ও ফল আপনার কোলেস্টেরলের মাত্রাকে কমাতে সাহায্য করে। বিশেষত যেসব সবজিতে ভিটামিন সি ও বিটা ক্যারোটিন রয়েছে সেগুলো বেশি খেতে হবে।
ভিটামিন সি : ভিটামিন সি রয়েছে সব ধরনের সাইট্রাস ফলে। যেমন : কমলা, গ্রেপফল, লেবু ইত্যাদি। সব ধরনের বেরি জাতীয় ফল। যেমন : ক্র্যানবেরি, স্ট্রবেরি, ব্ল্যাকবেরি ইত্যাদি। পেয়ারা ও আমের মধ্যেও ভিটামিন সি পাওয়া যায়। এ ছাড়া ক্যাবেজ বা পাতাকপি পরিবারের খাবারেও আছে ভিটামিন সি। যেমন : সবুজ বা চায়নিজ পাতাকপি, ব্রকোলি ইত্যাদি। ভিটামিন সি-এর আরেকটি ভালো উৎস হচ্ছে মরিচ।
বিটা ক্যারোটিন : গাঢ় হলুদ ফলে বিটা ক্যারোটিন রয়েছে। যেমন : আম, হলুদ পিচফল, কাঁঠাল ইত্যাদি। সবজির মধ্যে যেমন : কুমড়া, মিষ্টি আলু, কাঠবাদাম, গাজর ইত্যাদির মধ্যেও বিটা ক্যারোটিন রয়েছে। এ ছাড়া গাঢ় সবুজ সবজি যেমন : ব্রকোলি, পাতাকপি ইত্যাদি খেতে হবে শরীরে বিটা ক্যারোটিনের চাহিদা পূরণ করার জন্য।
যদি আপনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং কোলেস্টেরল বৃদ্ধি পায় তবে অবশ্যই নিয়মিত খাদ্যতালিকায় এগুলো রাখতে হবে।
✌রসুন এবং অন্যান্য পেঁয়াজ পরিবারের সদস্য
সুস্বাস্থ্যের জন্য রসুন খাওয়ার ইতিহাস বহু পুরোনো। গবেষকরা বলছেন, রসুন, পেঁয়াজ ও পেঁয়াজজাতীয় খাবার শরীরে বাজে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমায় এবং হৃৎপিণ্ডকে ভালো রাখে। তরকারি ও সালাদে আমরা এটি ব্যবহার করতে পারি। এগুলো বেশ হৃৎপিণ্ডবান্ধব খাদ্য।
✌ অপ্রক্রিয়াজাত দানাজাতীয় খাবার
সব ধরনের অপ্রক্রিয়াজাত দানাজাতীয় খাবারে ভিটামিন বি ও মিনারেলস রয়েছে। এগুলো চর্বি ও কোলেস্টেরল কমায়। এ ধরনের খাদ্য যেমন : রুটি, গম, ভুট্টা, ওটমিলস ইত্যাদি। ওটস-এর মধ্যে রয়েছে হাই সলিউবল ফাইবার যা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে বেশ কার্যকর।
✌সামুদ্রিক মাছ
গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সপ্তাহে তিনদিন অথবা এর বেশি সময় মাছ খায়, তাদের শরীরে খারাপ কলেস্টেরল কম থাকে। যারা উচ্চ রক্তচাপ এবং বিভিন্ন হৃদরোগে ভুগছেন তাদের জন্য মাছ খুব উপকারী। এর মধ্যে হাই ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড রয়েছে।
✌ ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড-জাতীয় খাদ্য
আগেই বলা হয়েছে, ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড শরীরে কোলেস্টেরল কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে দুর্ভাগ্যবশত অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমরা শরীরের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত পরিমাণে এই খাবার খেয়েথাকিনা।
কোলেস্টেরোল কমানোর কিছু সহজ উপায়:
দেহের কোলেস্টেরোলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই সহজ, শুধু প্রয়োজন সামান্য সচেতনতা৷ -তেল বা চর্বি জাতীয় খাদ্যগুলো খুবই মুখরোচক, কিন্তু এগুলোই শরীরের জন্য সবচেয়ে বেশী ৰতিকর৷ তেল জাতীয় বা ভাজা-পোড়া জিনিস কম খাবেন৷ চিংড়ি মাছ, ডিমের কুসুম প্রভৃতি উচ্চ কোলেস্টেরোলযুক্ত খাবার চেষ্টা করবেন পরিহার করতে৷ -দৈনিক খাদ্য তালিকায় একটু করে হলেও আঁশ জাতীয় খাদ্য রাখার চেষ্টা করম্নন৷ আঁশ জাতীয় খাদ্য যেমন: ইসুবগুল, কচুর লতি, ডাঁটা, বিভিন্ন শাক প্রভৃতি৷ এগুলো রক্তের কোলেস্টেরোল ও Fat কমাতে সাহায্য করে৷ -দৈনিক ব্যায়াম করবেন, না পারলে অনত্মত এক ঘন্টা হাঁটার অভ্যাস করম্নন৷ ব্যায়াম করলে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক হয়৷ ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কিছুটা কমে৷ ওজন কমাতে চেষ্টা করম্নন৷ -চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার যত পারবেন কম খাওয়ার চেষ্টা করম্নন৷ মিষ্টি জাতীয় খাবার দেহে শক্তি যোগায়৷ ফলে দেহে এর প্রয়োজন রয়েছে৷ কিন্তু অধিক পরিমাণে গ্রহণ করলে তা নানারূপ সমস্যার সৃষ্টি হয়৷ -বেশি বেশি ভিটামিন সি বা টক জাতীয় খাবার খাবেন৷ টক জাতীয় খাদ্যে কোলেস্টেরোল কমাতে জাদুর মত কাজ করে৷ -অনেকেরই ধারণা মাছের তেল কোলেস্টেরোল বাড়ায়৷ কিছু কিছু মাছের তেল রয়েছে যেগুলো রক্তের কোলেস্টেরোলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে৷ যাদের দেহে চর্বি বেশি, তাদের মাছের তেল খেতে দিলে ৬৮% কোলেস্টেরোল কমে৷ উদ্ভিদজাত তেল অনেক সময় কোলেস্টেরোল হ্রাস করে৷ মাছের তেল খেলে ৪২% কোলেস্টেরোল কমে যায়৷ -বিভিন্ন গাছনত্ম ওষুধ খেতে পারেন যেমন-অজর্ুনের ছাল, চিরতা, এগুলোও কোলেস্টেরোল কমাতে সাহায্য করে৷ -প্রচুর পরিমাণে ফলমূল ও শাক-সবজি খাবেন৷ দেহের কোলেস্টেরোল কমাতে এ দুটোর বিকল্প আর কিছু নেই৷ বেশি বেশি শসা খাবেন৷ শসা খুবই উপকারী দেহের ওজন হ্রাস করতে, কোলেস্টেরোল কমাতে৷ -এখন রক্তে কোলেস্টেরোল কমানোর নানারকম এন্টিবায়োটিক রয়েছে, যেগুলোর পাশর্্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে৷
তবে নানারকম হারবাল ওষুধ সেৰন ফলদায়ক৷ হঠাত্ রক্তে কোলেস্টেরোলের মাত্রা বেড়ে গেলে চিনত্মিত হওয়ার কিছু নেই৷ অনেকে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেয়৷ এটা শরীরের জন্য আরও বেশি পরিমিত পরিমাণে দেহের চাহিদা মিটিয়ে খাদ্য গ্রহণ করে, সামান্য ব্যায়াম ও নিয়ম মেনে চলে ধীরে ধীরে খুব সহজেই এই কোলেস্টেরোলের মাত্রা কমিয়ে আনা যায়৷ তবে চেষ্টা করবেন যতদূর সম্ভব কম কোলেস্টেরোলযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করতে৷✋👍
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন