সানফ্লয়ার বা সূর্যমুখী তেলই শেরা তেল...!
সানফ্লয়ার বা সূর্যমুখী তেলঃ
সানফ্লয়ারএ প্রচুর পরিমানে খাদ্যতালিকাগত ফাইবার থাকায়, সূর্যমুখী ফুলের বীজ খুবই উপকারী একটি উপাদান। এর ফলে হজম খুব ভালো হয়। এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও দূর করে থাকে। সূর্যমুখী ফুল আমাদের সবার কাছে পরিচিত। সুন্দর এই ফুলটি সখের বাগান সাজাতে খুব পারদর্শী।
বানিজ্যিকহারে তেল উৎপাদনেও এর তুলনা হয় না। দেশের বেশ কিছু অঞ্চলে সূর্যমুখীর চাষ মাঠের পর মাঠ দৃষ্টি জুড়ায় সূর্যের হাসিমাখা দৃশ্যে।
সূর্যমুখী বীজের তেলে রয়েছে অসাধারণ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা। আর তাই সুস্থ থাকতে অনেকেই নিজেদের রান্নার কাজে এই তেল ব্যবহার করে থাকেন। আজ জেনে নেব সূর্যমুখী বীজের অসাধারণ স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করতেঃ মানবদেহে যে কোষগুলো সক্রিয় ভূমিকা পালন করে সূর্যমুখীর বীজ সেই কোষের ক্ষতি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। সূর্যমুখী বীজে আছে সেলেনিয়াম নামক উপাদান, যা ক্যান্সারকে প্রতিরোধে অত্যান্ত শক্তিশালী।
মানসিক চাপে কমায়ঃযারা অধিক মানসিক চাপে ভোগেন তাদের জন্য সূর্যমুখী বীজতেল অত্যান্ত জরুরি। সূর্যমুখী বীজের ম্যাগনেসিয়াম উপাদান আমাদের মানসিক চাপ দূর করে, মাইগ্রেনের সমস্যা দূর করে এবং আমাদের মস্তিষ্ককে শান্ত রাখতে সাহায্য করে।
সূর্যমুখী হার সুস্থ রাখেঃ
এর বীজ আমাদের দেহের হাড় সুস্থ রাখে ও মজবুত করে। হাড় মজবুত করতে এই তেলে প্রয়োজনীয় ম্যাগনেসিয়াম ও কপার পাওয়া যায়। সূর্যমুখী বীজে থাকা ভিটামিন ই আমাদের দেহে বাতের ব্যথা দূর করতে সহায়তা করে।
ত্বকের সজীবতা বজায় রাখতে
সূর্যমুখী বীজ সাহায্য করেঃ
এই তেলে থাকা ভিটামিন ই আমাদের ত্বককে সূর্যের আল্ট্রা-ভায়োলেট রশ্মি থেকে বাঁচায়।
রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করেঃ সূর্যমুখী বীজে থাকা প্রচুর পরিমানে অ্যান্টিঅক্সিডেণ্ট দেহের প্রতিটি হাড়ের সংযোগে ব্যথা, গ্যাস্ট্রিক আলসার, দেহের চামড়ায় জ্বালা-পোড়া, হাঁপানি ইত্যাদি রোগ সারিয়ে তোলে। প্রতিদিন দুই টেবিল চামচ সূর্যমুখী বীজ আমাদের হার্ট এর সমস্যা থেকে দূরে রাখে।
অপ্রয়োজনীয় কলেস্টরোল দূর করেঃ হার্টকে ভলো রাখতে সাহায্য করে। সুস্থ থাকতে প্রতিদিন আপনি বাদামের মতো সূর্যমুখী বীজ ভেজে খেতে পারেন।
সানফ্লয়ার বা সূর্যমুখী ফুলের বীজে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ই আছে। যা আমাদের ত্বককে স্বাস্থ্যকর রাখে। সেল ড্যামেজের হাত খেকে ত্বককে বাঁচায়।
সূর্যমুখী হৃৎপিণ্ডটি আবিষ্কার করে হাজার হাজার বছর আগে আমেরিকানরা; তারা গবাদি পশুর খাদ্য হিসাবে এবং কখনও কখনও প্রসাধন জন্য ব্যবহার করা হয়।
সূর্যমুখীর তেল অন্যান্য সাধারণ তেলের চাইতে একটু আলাদা। এক গবেষণায় দেখা গেছে রান্নার জন্য সয়াবিন তেলের চাইতে সূর্যমুখী বীজ থেকে পাওয়া তেল দশগুণ বেশী পুষ্টিমান সমৃদ্ধ।সানফ্লোয়ার তেল বা সুর্যমুখী তেল হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের আশঙ্কাও কমিয়ে আনে। ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে ওমেগা-৬ ফ্যাটি এসিড। ফলে ডায়াবেটিস প্রতিরোধে এটি বেশ কার্যকর। যাঁরা আগে থেকেই এই তেলে অভ্যস্ত হয়েছেন, তাঁরা ডায়াবেটিকস এড়িয়ে চলতে পারেন ।
ওজন কমানোঃ
যারা ওজনের ভারে অস্থির, তাদের জন্য আছে সানফ্লাওয়ার তেল। এর অন্যতম ফ্যাটি এসিড দেহের চর্বি পোড়াতে কার্যকর ভূমিকা রাখে। এ কারণে স্বাস্থ্যসচেতনদের কাছে তেলটি খুবই জনপ্রিয়। খাদ্য তালিকা এদিক-সেদিক না করে শুধু সূর্যমুখী তেল ব্যবহার করে স্বাস্থ্যকর ওজন ধরে রাখা যায়। চুলের যত্ন ওলিকএসিডের প্রাচুর্যতাও আছে এই তেলে। আর এটি চুলের জন্য খুবই উপকারী। দ্রুত চুল বৃদ্ধির পাশাপাশি এটি চুলের গোড়া শক্ত করে। চুলের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধিতেও সহায়ক । তাই অনেক ক্ষেত্রে প্রসাধনী বানাতে সূর্যমুখী তেলের ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
সানফ্লয়ার তেলে লিনোলিক এসিড বেশি থাকার কারণে ত্বকের জেল্লা বাড়ে। লোমকূপের গোড়ার ময়লা বের করে আনতে বেশ কার্যকর তেল এটা। এই উপাদানটি ত্বকের নতুন কোষ গজাতেও সহায়ক করে থাকে। এছারা সানফ্লোয়ার ত্বকের অন্য সকল ধরনের সমস্যাও দূর করে থাকে।
সানফ্লয়ার তেল প্রোস্টাগ্লান্ডিন্স নামের এক ফ্যাটি এসিডের যৌগ গঠনে ভূমিকা রাখে যা ওমেগা-৬। এতে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন