মশা মারতে কামান ফিট করছেন....?
বলুনতো মশার কয়েলের কাজকি..?
মশা মারা না কি মশা তারান।
অবাক হলেন অামার কথায় তাহলে
লেখাটি অাপনার জন্য...!
একটা মশার কয়েল একশ’টা সিগারেটের সমান ক্ষতি কর প্রভাব ফেলছে অাপনার ফুসফুসে।
যে দেশে হরলিক্স এর মত ব্রান্ড বি,এস,টি,অাই অনুমোদন হিন বছরের পর বছর মার্কেটিং করছে এমন কি এখন প্রয়জন মনে করেনা, সেখানে মশার কয়েল নিয়ে অালচনা বলতে পারেন এক ধরনের বৃথাতর্ক।
নাকে তেল দিয় সচেতন মহল অচেতন হয়ে ঘুমাচ্ছে...!
অনুসন্ধানে জানা যায়, বাজারে বর্তমানে দেড় শতাধিক ব্র্যান্ডের মশার কয়েল পাওয়া যায়। এর মধ্যে বিএসটিআই অনুমোদন আছে মাত্র ৪৫টির মতো ব্র্যান্ডের। এছাড়া অনুমোদন না থাকলেও বাকি এসব কয়েলে বিএসটিআইয়ের লোগো ব্যবহার করছে। সাথে এখন বাজারে রয়েছে নিম্নমানের বিভিন্ন বিদেশী কয়েল, যা অধিকাংশই আমদানি হচ্ছে চীন থেকে। এ নিত্যব্যবহার্য মশার কয়েল বিএসটিআই বাধ্যতামূলক তালিকায়ও রয়েছে। তা সত্ত্বেও পর্যাপ্ত তদারকির অভাবে বাজারে বিক্রি হচ্ছে নিম্নমানের মানুষ মারার বিভিন্ন কয়েল।
বর্তমানে বাজারে মাষ্টার, নাইস গোল্ড, রকেট, বাওমা, মা হাই কোয়ালিটি (নীল ও কমলা রঙের প্যাকেট), এক্সট্রা পাওয়ার, বোস্টার, লিজার্ড মেগা, বাংলা কিলার, এক্সট্রা পাওয়ার ব্ল্যাক, ফাইটার, নাইটগার্ড, নাইট এঙ্গেল, বস সুপার, ক্রস ফায়ার, এটাক কিং, পোলার মেগা, ফ্যামিলি সুপার, মাছরাঙা, সোলার, এক্সট্রা পাওয়ার, ম্যাগপাই কত নামেই না কয়েল পাওয়া যাচ্ছে। ক্রেতারা হয়তো জানে না মশা নিধনের নামে প্রকারান্তরে মানুষ মারার কয়েল বিক্রি হচ্ছে। মারাত্মক ক্ষতিকর কয়েল উৎপাদন ও বাজারজাত করছে ২০-২২টি দেশীয় বেনামি কারখানা। ভুয়া পিএইচপি নম্বর ও বিএসটিআইয়ের লোগো ব্যবহার করে আকর্ষণীয় মোড়কে এসব কয়েল বাজারে ছাড়া হচ্ছে। এ ছাড়া বিদেশ থেকে আমদানি করা হচ্ছে উচ্চমাত্রার অ্যাকটিভ ইনটিগ্রেডিয়েন্ট সম্পন্ন চায়না কয়েল।
অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, কয়েল তৈরিতে ভারত শুধু এলেথ্রিন ও থাইল্যান্ড পাইরেথ্রিন নামক কীটনাশক ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। তবে বাংলাদেশে কয়েল তৈরিতে পাইরেথ্রিন, এলিথ্রিন, ডি-এলিথ্রিন, ডি-ট্রান্স এলিথ্রিন, এস-এলিথ্রিন এবং মেটোফ্লুথ্রিন নামের ছয় প্রকারের ক্ষতিকর উপাদান ব্যবহারের অনুমতি দেয়া আছে। এসব রাসায়নিক নির্ধারিত মাত্রায় ব্যবহৃত হওয়ার কথা থাকলেও তদারকি না থাকায় যে যার মতো করে ব্যবহার করছে। এমনকি অনুমোদন ছাড়াই এস-বায়োথ্রিন নামক ক্ষতিকর বিষও ব্যবহার করা হচ্ছে কয়েলে।
বিষয়টি স্বীকার করে বিনিয়োগ বোর্ডের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশে আমদানি করা মশার কয়েলের বেশিরভাগই আসছে চীন থেকে। এসব কয়েলে কী উপাদান ব্যবহার করা হচ্ছে তা শনাক্ত করার মতো বন্দর ও বিএসটিআইয়ে কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই পরীক্ষা ছাড়াই হচ্ছে আমদানি। মশার কয়েল উৎপাদনে ভারতে এলেথ্রিন ও থাইল্যান্ডে পাইরেথ্রিন নামের রাসায়নিক ব্যবহার হচ্ছে। তবে এসব দেশ থেকে আমদানির পরিমাণ খুবই কম। আবার বাংলাদেশে কীটনাশক জাতীয় রাসায়নিক দিয়ে তৈরি হচ্ছে কয়েল। মানবদেহের জন্য এসব খুবই ক্ষতিকর।’ মশার কয়েলে ক্ষতিকর উপাদান নিয়ন্ত্রণ করতে মান যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান বিএসটিআই ও লাইসেন্স প্রদানের ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরকে এরই মধ্যে বিনিয়োগ বোর্ডের পক্ষ থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাদ্যে ফরমালিন ও পানিতে আর্সেনিকের প্রভাব যেমন দীর্ঘমেয়াদি, তেমনি কয়েলের বিষাক্ত উপাদানও মানুষের শরীরে দীর্ঘমেয়াদি জটিল রোগ সৃষ্টি করে। কয়েলে বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান থাকায় ক্যান্সার, বিকলাঙ্গতা ও লিভারের রোগী বাড়ছে বাংলাদেশে। এছাড়া এসব কয়েল ব্যবহারে শ্বাসনালিতে প্রদাহ, গর্ভের শিশুর ক্ষতি, লিভার-কিডনি বিকল হওয়া, ত্বকে চুলকানি, অ্যালার্জিসহ নানা চর্মরোগ হতে পারে।
রাষ্ট্রায়ত্ত মান প্রতিষ্ঠানটি বলছে, কারখানা অনুমোদন বিএসটিআই দেয় না। তাই কোনো কারখানা অনুমোদনহীন কিনা সেটা বিএসটিআইর খুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন। অভিযোগ পেলেই আমরা খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। কয়েল তৈরির কারখানার অনুমোদন পেতে সর্বপ্রথম কৃষি অধিদফতর থেকে দুটি সার্টিফিকেট লাগে। এরপরে জনস্বাস্থ্য নিরাপদ রাখার নিশ্চয়তা দিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সার্টিফিকেট লাগবে। পরে বিএসটিআইর অনুমোদন নিতে হয়। আগের কোনো সার্টিফিকেট ছাড়া কীভাবে তারা ব্যবসা করেন, পণ্য বাজারজাত করেন, সেটা বিএসটিআইর পক্ষে খুঁজে বের করা কঠিন। গত এক বছরে বিএসটিআই ঢাকা ও ঢাকার বাইরে অনুমোদনহীন অনেকগুলো মশার কয়েল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়েছে। এ সময়ে ৫৫টি প্রতিষ্ঠান সীলগালা করে দিয়েছি। প্রায় ৪ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন