কলা এর স্বাস্থ্যকর গুন কি...?
কলা গ্রামবাংলা তথা বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর সকলের কাছে পরিচিত বিভিন্ন গুণাগুণে সমৃদ্ধ একটি জনপ্রিয় ফল। এতে রয়েছে টিস্যু গঠনকারী উপদান যথা আমিষ, ভিটামিন এবং খনিজ। কলা ক্যালরির একটি ভাল উৎস। এতে কঠিন খাদ্য উপাদান এবং সেই সাথে পানি জাতীয় উপাদান সমন্বয় যে কোন তাজা ফলের তুলনায় বেশি থাকে। একটি বড় কলা খেলে ১০০ ক্যালরির বেশি শক্তি পাওয়া যায়। কলাতে রয়েছে সহজে হজমযোগ্য শর্করা। এই শর্করা পরিপাকতন্ত্রকে সহজে হজম করতে সাহায্য করে থাকে। কলার মধ্যে থাকা আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিন উত্পাদনে সাহায্য করে। গবেষকরা জানান, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং স্বাভাবিক রক্তপ্রবাহ নিশ্চিত করতে দেহে পটাশিয়ামের উপস্থিতি অত্যন্ত জরুরি যা কলায় পাওয়া যায়। এছাড়াও দেহে পটাসিয়ামের আদর্শ উপস্থিতি নিশ্চিত করা গেলে কমে যায় স্ট্রোকের ঝুঁকিও। আর এই উপকারী পটাশিয়াম কলায় আছে প্রচুর পরিমাণে। কলাকে complete fruits বলা হয়ে থাকে। কলাই স্বাস্থ্যকর ফল হিসেবে সবার অাগে চিনি অামরা, এক কথায় কলাই সবথেকে জনপ্রিয় ফল।
১। হার্ট-সুস্থ্য থাকেঃ কলার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম। যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ফলে হার্ট সুস্থ থাকে। স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে।
২। এনার্জি-অাছে কলায়ঃ ন্যাচারাল সুগার, সলিউবল ফাইবার ও পটাশিয়াম থাকার কারণে যে কোনও রকম এনার্জি ড্রিঙ্ক, এনার্জি বুস্টারের থেকে অনেক বেশি, অনেক ন্যাচারাল এনার্জি জোগায় কলা। এক্সারসাইজের আগে ও পরে তাই অবশ্যই কলা খান। অ্যাথলিট, টেনিস প্লেয়াররাও এনার্জির জন্য সবচেয়ে বেশি কলার উপরই ভরসা রাখেন।
৩।হজম-ক্ষমতা বারায়ঃ ডায়েটারি ফাইবার থাকার কারণে কলা হজম ক্ষমতা বাড়িয়ে পেট পরিষ্কার রাখে। হজমের সমস্যায় অ্যান্টাসিডের থেকে অনেক ভাল কাজ করে কলা। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে সকালে ঘম থেকে উঠে দুটো কলা খেয়ে নিন।
৪।আলসার- থেকে রক্ষকরেঃ কলার মধ্যে থাকা প্রয়োজনীয় খনিজ ও উপাদান হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের ক্ষরণ রুখতে সাহায্য করে। ফলে স্টমাক অলাসারের সমস্যায় ভাল কাজ করে কলা।
৫।ভিটামিন বি ৬-থাকেঃ কলার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন বি ৬। যা রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে ভিটামিন বি ৬। অ্যামাইনো অ্যাসিডের সিন্থেসিস বাড়িয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
৬।ভিটামিন ও মিনারেল- ভিটামিন বি ৬ ও পটাশিয়ামের পাশাপাশি কলায় রয়েছে ভিটামিন সি, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, আয়োডিন, সেলেনিয়াম ও জিঙ্ক। ফলে প্রতি দিনের ডায়েটে কলা থাকলে শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি অনেকটাই মেটে।
৭।কলার খোসা- শুধু শাঁস নয়। কলার খোসাও দারুণ উপকারী। সোরেসিস, অ্যাকনের মতো ত্বকের সমস্যায় ভাল কাজ করে কলার খোসা। সদ্য ছাড়ানো টাটকা কলার খোসা ত্বকের সোরেসিসের উপর ঘষে নিন। সারা রাত রেখে দিন। সকালে উঠে মুখে ধুয়ে ফেলুন।
৮।ক্যানসার এ কলাঃসম্পূর্ণ পাকা কলার মধ্যে রয়েছে টিউমর নেক্রোসিস ফ্যাক্টর।এই সাইটোকিন কমপাউন্ড রক্তের শ্বেতকণিকা বাড়াতে সাহাযিয করে। ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি বাধাপ্রাপ্ত হয়।
৯।স্ট্রেস- কমাতেঃ স্ট্রেস কমাতে কলা অব্যর্থ কলা। এর মধ্যে রয়েছে অ্যামাইনো অ্যাসিড ট্রিপটোফ্যান যা শরীরে সিরোটোনিমে পরিণত হয়।এই সিরোটোনিন স্ট্রেস কমিয়ে মুড ভাল করতে সাহায্য করে।অতিরিক্ত চাপের সময় কলা খেয়ে নিন। চাপ কমবে।
১০। গর্ভাবস্থায় কলা উপকারঃ ভালোভাবে প্রসব হওয়ার জন্য গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন কলা খাওয়া প্রয়োজন। কলা রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ায়। এটি গর্ভাবস্থায় সকালের ক্লান্তি ভাব দূর করে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন