কলমি শাকের রচনা সমগ্র


গ্রাম বাংলার অতি পরিচিত  ও জনপ্রিয়  একটি শাকের নাম বলতে গেলে প্রথমে বলতে হয় কলমি শাকের কথা কলমিশাক কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।









কলমিশাকের পাতা ও কাণ্ডে পর্যাপ্ত পরিমাণে আঁশ থাকে । এই আঁশ খাদ্য হজমে এবং পরিপাক ও বিপাক ক্রিয়ায় সহায়তা করে থাকে । কলমিশাক খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় এবং শরীর সুস্থ থাকে। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত সমস্যা  প্রকটভাবে অাছে যেমন টয়লেট করতে ৩০/৪৫মি: সময় লাগে তাদের জন্য কলমি শাক একটি অতুলনীয় খাবার।

কলমি শাকের পুষ্টি গুনঃ প্রতি ১০০ গ্রাম কলমি শাকে পাওয়া যায় প্রায় ২৯ কিলোক্যালোরি, সোডিয়াম ১১৩ মিলিগ্রাম, পটাসিয়াম ৩১২ মিলিগ্রাম, খাদ্যআঁশ ২.১ গ্রাম, প্রোটিন ৩ গ্রাম, কর্বোহাইড্রেটস ৫.৪ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৭৩ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ৫০ মিলিগ্রাম, লৌহ ২.৫ মিলিগ্রাম, জলীয় অংশ ৮৯.৭ গ্রাম।
 কলমি শাকের উপকারিতাঃ
১) কলমি শাকে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে বলে এ শাক হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে থাকে। তাই ছোটবেলা থেকেই শিশুদের কলমি শাক খাওয়ালে হাড় মজবুত হয়েথাকে।
২) কলমি শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন 'সি'। এটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে থাকে।
৩) কলমি শাক বসন্ত রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে থাকে। প্রাচীন কালে বসন্তের প্রতিশোধক হিসেবে কলমি শাকের ব্যবহারের কথা শুনাযায়।
৪) পর্যাপ্ত পরিমানে লৌহ থাকায় এই শাক রক্ত শূন্যতার রোগীদের জন্য দারুণ উপকারি পথ্য হিসেবে খাওন হয়েথাকে।
৫) জন্মের পর শিশু মায়ের বুকের দুধ না পেলে মাকে কলমি শাক রান্না করে খাওয়ালে শিশু পর্যাপ্ত পরিমানে দুধ পাওয়া যায়। বাচ্চারা যদি মায়ের দুধ কম পায় সেইক্ষেত্রে কলমী শাকের ঝোল দিয়ে রান্না করে খেলে মায়ের দুধ বাড়বে এবং তখন বাচ্চা দুধ পাবে।
৬) নিয়মিত কলমি শাক খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। কলমী শাক তুলে সেচে এক পোয়া পরিমাণ রস করে আখের গুড়ের সঙ্গে মিশিয়ে শরবত বানিয়ে সকাল-বিকাল এক সপ্তাহ খেলে ভালো উপকার পাওয়া যাবে।
৭) যদি কারো ফোড়া এই কলমী পাতা তুলে একটু আদাসহ পাটায় বেটে ফোড়ার চারপাশে লেপে দিয়ে মাঝখানে খালি রাখতে হবে। তিন দিন এইভাবে লেপে দিলে ফোড়া গলে যাবে এবং পুঁজ বেরিয়ে শুকিয়ে যাবে।
৮) বাগি বা ফোড়া উঠলে এই কলমী পাতা বেটে প্রলেপ দিলে বাগি মিশে যাবে।
৯) রাত কানা রোগ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই কলমী শাক কয়েক সপ্তাহ প্রতিদিন একবেলা ভাজি রান্না করে খেলে রাত কানা রোগ ভালো হয়।
১০) গর্ভাবস্থায় গর্ভবতি মায়েদের শরীরে, হাতে-পায়ে পানি আসে, সেই সময় কলমী শাক বেশি করে রসুন দিয়ে ভেজে তিন সপ্তাহ খেলে পানি কমে যাবে।
১১) গণরিয়া রোগ হলে প্রস্রাবের জায়গায় জ্বালা যন্ত্রণা করে। সেই সময় কলমীর রস করে ৩/৪ চামচ পরিমাণ ৩ সপ্তাহ খেলে ওই জ্বালা কমে যায়।
১২) হাত-পা বা শরীর জ্বালা করলে কলমী শাকের রসের সঙ্গে একটু দুধ মিশিয়ে সকালে খালি পেটে এক সপ্তাহ খেলে উপকার পাওয়া যায়।
১৩) পিঁপড়া, মৌমাছি, বিছা বা কোন পোকা-মাকড় কামড়ালে এই কলমী শাকের পাতা ডগাসহ রস করে লাগালে যন্ত্রণা কমে যায়।
১৪) আমাশা হলে কলমী পাতার রসের সঙ্গে আখের গুড় মিশিয়ে শরবত বানিয়ে সকাল-বিকাল নিয়মিত খেলে আমাশার উপশম হয়।
১৫) কলমিশাক চোখের জন্য বিশেষ উপকারী। কলমিশাক দৃষ্টিশক্তি প্রখর করে।
১৬) কলমি শাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্যশক্তি থাকায় শারীরিক দুর্বলতা দ্রুত সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে। রোগীদেরকে দ্রুত সুস্থ্য হবার জন্য তাই কলমিশাক খাওয়ানো হয়ে থাকে।
১৭) কলমিশাক মূলত আঁশজাতীয় খাবার। তাই শরীরের খাবার দ্রুত হজমের জন্য কলমিশাক বিশেষ উপকারী।
১৮) কলমি শাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে লৌহ থাকায় এই শাক রক্তশূন্যতার রোগীদের জন্য দারুণ উপকারী। সারা দেহে প্রয়োজনীয় রক্ত সরবরাহ ঠিক রাখতেও এই শাক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
১৯) মহিলাদের বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় সমস্যায় দ্রুত কাজ করে কলমিশাক।
২০) ঋতুশ্রাবের সমস্যা দূরীকরণে কলমি শাক উপকারী ভূমিকা পালন করে।
২১) নিয়মিত কলমি শাক খেলে হজমশক্তি বৃদ্ধি পায় এবং কোষ্ঠ কাঠিন্য দূর হয়। কোষ্ঠকাঠিন্য হলে কলমি শাকের সঙ্গে আখের গুড় মিশিয়ে শরবত বানিয়ে সকাল-বিকাল এক সপ্তাহ খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়। আমাশয় হলেও এ শরবত কাজ করে।








২২) যাদের মাঝে মাঝে বিনা কারণে মাথাব্যথা করার সমস্যা আছে তারা কলমি শাক খেলে উপকার পাবেন।
২৩) অনিদ্রা দূরীকরণেও কলমি শাক খেতে পারেন।
২৪) মাথার খুশকি দুর করতেও কলমি শাক কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
উপরে উক্ত অালোচনার উপসংহারে কলমিলতা বা কলমি শাক সত্যি একটি অসাধারণ শাক, তাই খাদ্য তালিকায় রাখুন কিছুটা কলমি শাক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

Mia Khalifa মিয়া খলিফা sex সমাচার

সিরকা বা ভিনেগার কি.. এর উপকারিতা কি...?

অাগরা শাক মানুষের জন্য ক্ষতিকর .....!