কোরবানির চামড়া নিয়ে তেলেসমাতি ....!

গত ৩১ বছরের মধ্যে এবারই সবচেয়ে কম
দামে বিক্রি হচ্ছে পশুর চামড়া।





সংশ্লিষ্ট কেউ কেউ বলছেন, আর্থিক সংকটে আড়তদারেরা চামড়া কিনতে পারছেন না। আবার ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সিন্ডিকেট করে চামড়ার দাম একবারেই কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা বলছেন, চামড়ার দাম নিয়ে অন্তরালে কেউ কেউ নোংরা খেলা খেলে নিজেরা লাভবান হওয়ার চেষ্টা করছেন। চামড়ার দাম কম হওয়া অনেকে চামড়া ফেলে দিচ্ছে অথবা মাটিতে পুঁতে রাখছে এমন চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম দেখা গেছে। বিষয়টি নিয়ে ফেইসবুকে ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছেন নেটিজেনরা।






সাংবাদিক ও গবেষক মেহেদী হাসান পলাশ তার ফেইসবুকে এক দীর্ঘ স্টাট্যাসে লিখেন, ‘কুরবানীর চামড়া সিন্ডিকেটের পেছনে ইসলামী শিক্ষা বিরোধী চক্রের হাত নেই তো? ভারতের চামড়া শিল্পের বাজার বহুলাংশে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের চামড়ার উপর নির্ভরশীল। পাকিস্তান ভারতের সাথে ব্যবসা বন্ধ করে দেয়ায়, এ বছর ভারতকে বাংলাদেশের চামড়ার উপর অধিক নির্ভরশীল হতে হবে। ফলে বাজার চাহিদানুযায়ী চামড়ার দাম ভাল পাওয়ার কথা। কিন্তু এ বছর ঘটেছে সম্পূর্ণ উল্টো। একসময় ৫০০ টাকায় একটি ভালমানের দেশী চামড়ার জুতা পাওয়া যেত, তখন কুরবানীর গরুর চামড়া ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকায় বিক্রি হতো। এখন ভাল মানের চামড়ার দেশী জুতা ৭/৮ হাজার টাকার নিচে পাওয়া যায় না। কিন্তু এখন গরুর চামড়া ২০-২০০ টাকায় নেমে এসেছে। এতে অনেকেই ক্ষুদ্ধ হয়ে চামড়া পুঁতে, পুড়িয়ে বা নদীতে ফেলে দিয়েছেন এমন ভিডিও স্যোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল। এই প্রবণতা জনপ্রিয় হলে কার কি হবে জানিনা, তবে বাংলাদেশের চামড়া শিল্প ধংস হবে এবং বিদেশী কোম্পানীর পোয়াবারো হবে। কিন্তু কেন এমন হলো- এমন প্রশ্নের জবাবে অধিকাংশের উত্তর, সিন্ডিকেট। আমি বিষয়টাকে একটু অন্যভাবে দেখি যাতে রাজনীতি ও ষড়যন্ত্র রয়েছে, মুনাফাখোরি তো বটেই। কুরবানীর চামড়া সমাজের একেবারেই নিঃস্ব, দরিদ্রদের প্রাপ্য। আমাদের রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থায় এ শ্রেণী চিরকালই শোষিত। তাদের কল্যাণের জন্য সরকার ও নেতাদের শো অফ থাকে, দায়িত্ব নয়। কারণ সরকার ও নেতাদের মধ্যে চামড়া ব্যবসায়ী ও শিল্প মালিকদের অংশিদারিত্ব ও প্রতিনিধিত্ব থাকে। ফলে ওই যে বলে, ‘রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি’- এখানেও তাই ঘটে। তার থেকেও বড় কথা, এদেশের বেশিরভাগ মানুষ এখনো কুরবানীর চামড়া সরাসরি এতিমখানা ও মাদ্রাসায় দান করে থাকে- যেখানে মূলত ইসলামী শিক্ষা প্রদান করা হয়। বাংলাদেশের মাদ্রাসা ও এতিমখানাগুলো সারা বছরের ব্যয়ের একটা বড় অংশ আসে এই চামড়া বিক্রির অর্থ থেকে। এ চামড়ার সঠিক দাম পাওয়া গেলে মাদ্রাসা ও এতিমখানাগুলো আরো ভালভাবে চলতে পারতো এবং নিজেদের শিক্ষা ও পরিধি বিস্তার ঘটাতে পারতো। আমার মনে হয়, কুরবানীর চামড়ার দাম এভাবে ফেল দেয়ার পেছনে মাদ্রাসা তথা ইসলামী শিক্ষাকে দুর্বল রাখার একটি ষড়যন্ত্র গভীর থেকে কাজ করে। কেননা, সারা বছর কিন্তু চামড়ার দাম এমন থাকে না। কুরবানীর চামড়ার দাম নির্ধারক সিন্ডিকেটের পেছনে গভীরভাবে ইসলাম বিরোধী কোনো চক্র সক্রিয় থাকতে পারে বলে আমার সন্দেহ।’








লেখক মুনসুর আজিজ লিখেন, ‘একসময় আমরা গর্ব করতাম আমা‌দের নদ~নদী নিয়ে ‘তেরো শত নদীর দেশ বাংলা‌দেশ’। তারপর আমরা পাট নি‌য়ে গর্ব করতাম ‘সোনা‌লি আঁ‌শের দেশ বাংলা‌দেশ’, এরপর আমরা চামড়া নি‌য়ে গর্ব কর‌তে শেখলাম ‘কাঁচা সোনার দেশ বাংলা‌দেশ’ নিয়ে। নদীখে‌কোরা গি‌লে খে‌লো নদ~নদী, অথর্ব রাজনী‌তিক বুঝ‌লো না পা‌টের কদর। এখন আমরা তিলদিল ক‌রে গ‌ড়ে ওঠা চামড়া শিল্পকে গলা টি‌পে হত্যা কর‌ছি। ব্যক্তিস্বার্থ মানুষ‌কে অন্ধ ক‌রে দেয়। ৩০০০ টাকার চামড়ার মূল্য ৩০০ টাকাও নেই। একটা সময় আস‌বে ব্যবসায়ীরা বা‌ড়ি বা‌ড়ি ঘুর‌বে চামড়ার জন্য, তারা পা‌বে গা‌র্মে‌ন্টস এর ঝুট এর ন্যায় কু‌চি কুচি করা চামড়ার টুক‌রো। এরপর কপা‌লে থাপ্পর মার‌বে আর হায় হায় কর‌বে!’





‘এই চামড়ার টাকা পায় বেশির ভাগ এতিমখানার বাচ্চারা বা গরীব মানুষেরা। সব জিনিসপত্র যখন উর্ধমুখী তখন চামড়ার দাম প্রতি বছর নিম্নমুখী করা হচছে কি এতিম বা গরিবকে ঠকানোর জন্য?’ - রেহাল ইসলামের প্রশ্ন।

সোহেল রানা লিখেন, ‘ভালো কোনো ব্রান্ডের চামড়া জুতো কিনতে গেলে ১২০০ কিংবা ১৫০০টাকা লাগে, তাতে চামড়া লাগে মাত্র ১০ ইঞ্চি বাই ৪ চওড়া। কিন্তু একটা আস্তো চামড়া কিনতে গেলে লাগে ৩০০/৪০০টাকা! তাহলে বাকি টাকা কার পকেটে যায় ?’


‘এত বড় সিন্ডিকেট। সরকার কি চোখে টিনের চশমা পড়ে আছে ?’ - আহমেদ মুনিরের জিজ্ঞাসা।

ফারুক হোসাইন লিখেন, ‘গরিব মিসকিন এর হক এর প্রতি তামাশা ছাড়া আর কিছুই না, এজন্য চামড়াজাত দ্রব্য বা চামড়াজাত শিল্পের সহিত যারাই জড়িত অবশ্যই অবশ্যই তাদেরকে কড়ায়-গন্ডায় এর হিসাব একদিন দিতে হবে। আর এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত মুসলিমদের এই ধরনের ন্যাক্কারজনক কাজ হতে ফিরে আসার আহবান জানাচ্ছি।


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অাগরা শাক মানুষের জন্য ক্ষতিকর .....!

Mia Khalifa মিয়া খলিফা sex সমাচার

থানকুনি পাতার স্বাস্থ্য উপকারিতা কি....?