সফল নারী উদ্যোক্তার উদাহরণ নাসরিন সুলতানা .......!!!






অাজ অার দেশের নারী সমাজ  অসহায় বা অবহেলিত নয়,  তাইতো  ঘুড়ে দারানোর অদম্য উচ্ছাস ইচ্ছে শক্তি সাহস তাদের উদ্যোক্তা হতে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।
 নিজেদের পাশাপাশি অন্য নারীদেরও উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে সহযোগিতা করছেন।
ঢাকার কলাবাগান, উত্তর ধানমন্ডি এলাকার নাসরিন সুলতানা এমনই একজন নারী, যিনি বর্তমানে একজন সফল উদ্যোক্তা। তার সাথে আলাপ হয় সিলেট এসএমই পণ্য মেলায়। তিনি জানান তাঁর সফলতার গল্প।
এই সফল উদ্যোক্তা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পেছনে রয়েছে তার নিজের পরিশ্রম এবং এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়। পথে পথে নানা প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করতে হয়েছে নাসরিন সুলতানাকে, তবে কখনোই দমে যাননি তিনি।
 নিজের মেধা, মননশীলতা, কর্মনিষ্ঠা এবং একাগ্র প্রচেষ্টার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন তিনি।
মাত্র কয়েক হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে ‘অপরূপা বিউটি পার্লার’ দিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিলেন। সেই ব্যবসার পরিধি বৃদ্ধি পেয়ে ‘অপরূপা বিউটি পার্লার এন্ড বুটিকস’-এ রূপ নেয়। তার প্রতিষ্ঠানে তৈরি বাটিক থ্রি-পিস, ব্লক থ্রি-পিস, হ্যান্ডপ্রিন্ট, ওড়না, ওয়ান পিস, শিশুদের পোশাক, বেডশিট, শাড়ি ও উপহার সামগ্রীসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রি হচ্ছে দেশ-বিদেশে। এছাড়াও তার প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছেন প্রায় ১৫ জন নারী।


১৯৮৭ সালে গাজীপুরের কাপাসিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন নাসরিন সুলতানা। তার পিতা মিজানুর রহমান পেশায় ব্যবসায়ী ও মাতা ফেরদৌসী বেগম গৃহিনী। পিতা-মাতার চার সন্তানের মধ্যে তিনি সবার ছোট। শিক্ষাগত জীবনে তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।
নাসরিন সুলতানা বলেন, ‘শুরুটা আসলে নিজের ছোটবেলার ইচ্ছা থেকে। আমার মা কাপড়ের হাতের কাজ অনেক ভালো পারতেন। মায়ের কাছ থেকেই হাতের কাজ করা শিখি। অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা থাকলেও আমার মনে হয় যে ঘরে বসে থাকার চেয়ে কিছু করলে ভালো হয়। তাই হাতের কাজ করার জন্য প্রথমে সাড়ে চার হাজার টাকা দিয়ে বাজার থেকে কিছু থ্রি-পিস ও সুতা কিনে আনি। পরে সেগুলোতে নিজেই কাজ করি এবং আশপাশে বিক্রি করে দিই। দেখা যায় যে ক্রেতাদের চাহিদা বেশ ভালো এবং তারা পোশাক পরার পর অনেক প্রশংসাও করতেন।’
তিনি বলেন, ‘ক্রেতাদের চাহিদা ও প্রশংসা দেখে আমার মনোবল এবং কাজ করার আগ্রহ আরো বেড়ে যায়। পরে আমি হাতের কাজ ছাড়াও বিভিন্ন কাপড় তৈরির উপর প্রশিক্ষণ নিই এবং কাপড় তৈরির কাজ করতে থাকি। এভাবে কাজ করে সামান্য আয় হতে থাকে। এই আয়ের থেকে টাকা জমিয়ে পাইকারিতে ওয়ান পিসহ বিভিন্ন কাপড় কিনে এনে হাতের কাজ করতে থাকি। পরে কয়েকজন কর্মী নিয়োগ দিই। চুক্তিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অর্ডার নিয়ে তা তৈরি করে দিতাম। অর্ডারের মালামাল নিখুঁতভাবে এবং সঠিক সময়ে ডেলিভারি দিতাম। এতে আমার পরিচিতি বাড়তে থাকে, পাশাপাশি বেশ অর্ডারও পেতে শুরু করি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অর্ডার এবং ব্যবসার প্রসার আরও বাড়তে থাকে।’
নাসরিন সুলতানা আরো বলেন, ‘২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে আমি ব্যবসার কার্যক্রম শুরু করি। বর্তমানে ব্যবসার পরিসর খুব বেশি না হলেও অল্প সময়ের মধ্যে অনেক ভালো পর্যায়ে যেতে পেরেছি। দিন দিন ব্যবসার পরিসর বাড়ছে। বর্তমানে আমি অর্থনৈতিকভাবে বেশ স্বাবলম্বী। তাছাড়া অনেকজনের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পেরেছি। এখন আমার প্রতিষ্ঠানে ২০ জন নারীকর্মী কাজ করছেন। আমার মাসিক আয় প্রায় দেড় লক্ষাধিক টাকা। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় এবং বিদেশে পণ্য সরবরাহ করি। এছাড়া পণ্যের প্রচার ও প্রসার এবং বিক্রির জন্য বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠিত মেলায় অংশগ্রহণ করি।’
তিনি বলেন, ‘সাধারণত বাটিক থ্রি-পিস, ব্লক থ্রি-পিস, হ্যান্ডপ্রিন্ট,  ওড়না, ওয়ান পিস, শিশুদের পোশাক, বেডশিট, কুশন কাভার, নেট কভার, ব্যাগ শো-পিস, এক্সক্লুসিভ শাড়ি ও উপহার সামগ্রীসহ বিভিন্ন পাটের তৈরি পণ্য তৈরি করছি। সব পণ্যেরই গুণগত মান রয়েছে।’
নাসরিন বলেন, ‘আমি চাই আমার ব্যবসার আরো প্রসার হোক। স্বাবলম্বী হয়ে বেঁচে থাকার স্বার্থকতাটাই আলাদা। তাই বলবো, একজন সফল নারী উদ্যোক্তা হতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে মাঠে নেমে পড়তে হবে। প্রতিবন্ধকতা থাকবেই, তবে ইচ্ছা থাকলে তা অতিক্রম করা সম্ভব। আপনি যে কাজ ভালো পারেন এবং আপনার কাছে যত কম টাকাই থাক না কেন, সেটা দিয়েই শুরু করুন। কারণ কাজ শুরু না করলে কেউ জানবে না যে আপনি কাজ করতে পারেন বা কাজ করতে চান।’
ব্যবসায় চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে নাসরিন সুলতানা বলেন, ‘একজন নারীকে ঘরের বাইরে কাজ করতে হলে অনেক ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়। প্রথমেই বাধা আসে পরিবার থেকে। এরপরে সমাজ আর রাষ্ট্র তো আছেই। আমার বেলাতেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। অদম্য আগ্রহের জন্য অজ অামি একজন সফল উদ্যোক্তা হতে পেরেছি। 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

Mia Khalifa মিয়া খলিফা sex সমাচার

সিরকা বা ভিনেগার কি.. এর উপকারিতা কি...?

অাগরা শাক মানুষের জন্য ক্ষতিকর .....!