কৃষি খামার পরিকল্পনা থেকে সফল উদ্যোক্তা
প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েও কৃষিকাজকে উপার্জনের খাত হিসেবে ধরে রেখেছেন অনেকেই, সাফল্যও পাচ্ছেন অনেকে। কৃষিতে সাফল্য পাওয়া অনেকেই জাতীয় পুরস্কার পায় প্রতিবছর। এমনই একজন পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া উপজেলার মাটিভাঙ্গা গ্রামের মো. আবুবকর ছিদ্দিক, যিনি বাণিজ্যিক সবজি চাষের উপর এবার জাতীয় কৃষি পুরস্কার পাচ্ছেন। ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ১৬ জুন পুরস্কার বিতরণ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী।
ভান্ডারিয়া সরকারি কলেজ থেকে বিএ এবং ফুলবাড়িয়া বিএড কলেজ, খুলনা থেকে বিএড শেষ করে ১৯৯৫ সালে নিজ গ্রামে মাদ্রাসায় ইংরেজি বিষয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন। পরিবারের সচ্ছলতার জন্য পাশাপাশি কৃষিকাজ শুরু করেন ১৯৯৬ সালে। ৩৩ শতক জমিতে কলা চাষ দিয়ে কৃষিকাজ শুরু করেন আবুবকর, বর্তমানে ২০০ শতক জমিতে কলা চাষ করছেন এই কৃষক। তাছাড়াও নিজের ১০০ শতাংশ এবং ১৯৯ শতাংশ জমি বর্গা নিয়ে সবজি চাষ করছেন। সারা বছর দুজন লোক থাকে তার জমি দেখাশোনা করার জন্য। দরিদ্র ঘরের সন্তান হলেও পড়াশোনা করার প্রবল ইচ্ছা ছিল আবুবকরের। পড়াশোনায় এত আগ্রহ দেখে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু কলেজে পড়ানোর দায়িত্ব নেন। জীবনের এই পর্যায়ে এসে কাজের স্বীকৃতি হিসেবে এত বড় অর্জনটি আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে উত্সর্গ করতে চান আবুবকর।
আবুবকর বলেন, ‘দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বেশিরভাগ সময়েই পানি নিয়ন্ত্রণে থাকে না। তাই আমন ধান উঠার পর বহুসময় ধরে আবাদি জমি খালি পড়ে থাকে। পানি উঠে ফসল নষ্ট হওয়ার ভয়ে এই সময় কেউ চাষাবাদ করে না। আমি চিন্তা করলাম কীভাবে এই ফসলি জমিগুলোকে এই সময়ে কিভাবে কাজে লাগানো যায়। আমি পরীক্ষামূলক ৩৩ শতক জমি ব্যবহার করি। জমিতে ১২ হাত পরপর মাটি দিয়ে উঁচু করে সেখানে করলা চাষ শুরু করি। আর সেখান থেকেও সাফল্য পাই। গ্রামের অন্যান্য কৃষকেরা চাষের এই প"তি দেখে আগ্রহী হয়ে তারাও এভাবে চাষাবাদ শুরু করে।’
আবুবকরের জন্ম ১৯৭৫ সালের ৫ আগস্ট। বাবা মো. আবদুল অহাব হাওলাদার ও মা আমিনা বেগম। কৃষিতে হাতেখড়ি পান বাবার কাছে। পারিবারিক কিছু ঋণ থাকার কারণে নিজের কাজের মাধ্যমে তা পরিশোধ করে যাচ্ছেন। আর তিন সন্তান ও স্ত্রী নিয়ে বেশ ভালোই আছেন, বললেন এই কৃষক।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন