দরিদ্র জয় করা এক নারীর গল্প
নিতাই ইউনিয়নের কুঠিয়ালপাড়া গ্রামের রুমা বেগমের দিন এনে দিন খাওয়ার সংসার ছিল। তিনিও ওই দারিদ্র নিশ্চিত করন কর্মসুচী থেকে পঞ্চম ব্যাচে প্রশিক্ষন নিয়ে এ্যামবয়ডারী কাজ শিখে মহিলাদের ভ্যানিটি ব্যাগ তৈরী করে ভ্যাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি কিশোরগঞ্জ উপজেলায় পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের অফিসে প্রশিক্ষন নেই। আবার সেখান থেকে ১০ হাজার টাকা লোন নিয়ে এ্যামবয়ডারির মালামাল কিনে মেয়েদেও ভ্যানিটি ব্যাগ তৈরী করা শুরু করি। প্রতিটি ব্যাগ ৭শ টাকা থেকে একহাজার টাকা করে বিক্রি করি। আমি আমার স্বামীর পাশাপাশি সংসাওে সাহায়তা করতে পারছি।
গাড়াগ্রাম ইউনিয়নের মোতমাইননা বেগম সংসারে ঠিকমত উনুন জ্বলতোনা। মোতমাইননা বেগম বলেন, সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার জন্য আমার পাশের গ্রামের দরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসুচি থেকে প্রথম ব্যাচের প্রশিক্ষনার্থী বাবলি আপার মাধ্যমে আমি অফিসে গিয়ে আমার নাম দিয়ে আসি। অফিস থেকে তারা আমাকে ডাকলে আমি নকশি কাঁথার উপর প্রশিক্ষন নিয়ে কাজ শুরু করি। আমিও দশ হাজার টাকা লোন নিয়ে মালামাল কিনি। আমার তৈরিককৃত পণ্য বিক্রি করে যা লাভ হয় তা দিয়ে আমি সংসারের কাজ করি। এভাবে যদি আমি পণ্য তৈরী অব্যাহত রাখতে পারি তাহলে আমার সংসারের স্বচ্ছলতা ফিরে আসবেই।উপজেলা পল্লী উন্নয়ন বোর্ড ও উত্তরাঞ্চলে দারিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসুচীর প্রডাকশন ম্যানেজার এইচ এম রায়হান বলেন, ২০০৭ সালের ১ লা জুন হতে ২০১৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত এ উপজেলায় প্রথম পর্যায়ে ২৮৮ জন নারী বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষন নিয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০১৪ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৭ সালের এখন পর্যন্ত মোট ৪৩২ জন নারী প্রশিক্ষন নিয়েছে। ৭২০ জন প্রশিক্ষনার্থীর মাঝে এ কর্মসুচি থেকে মোট ১৬৬ জন প্রশিক্ষনার্থীকে সরকারীভাবে ১৫ লাখ ৩৬ হাজার টাকা ঋন বিতরন করা হয়েছে।
উপজেলা পল্লী উন্নয়ন অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, উত্তরাঞ্চলের ৩৫ উপজেলায় বি আর ডি বির আওতাধীন উদকনিক প্রকল্পের প্রশিক্ষন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। প্রশিক্ষন গ্রহন করে কিশোরগঞ্জ উপজেলায় প্রায় ৭০ ভাগ সুবিধাভোগী স্বকাজে নিয়োজিত। উদকনিক প্রকল্পটি দেশের প্রতিটি উপজেলায় বিস্তৃত করলে গোটা দেশের গরীব গ্রামীণ জনগোষ্টি এর সুফল পাবে এবং দারিদ্র বিমোচনে অগ্রনী ভুমিকা পালন করবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মেহেদী হাসান বলেন, দরিদ্র জনগোষ্টিকে প্রশিক্ষিত করে স্বাবলম্বী করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। তাছাড়া প্রশিক্ষিত নারীদের উৎপাদিত পণ্য যেমন ভ্রানিটি ব্যাগ, পাপস, নকশি কাঁতা সহ অন্যান্য পণ্য স্থানীয় ব্যাবসায়ীদের মাধ্যমে বিক্রি করার ব্যাবস্থা করা হয়েছে। আগামীতে তাদের পণ্যগুলো রাজধানী ঢাকা সহ বিভিন্ন জায়গায় বাজার জাত করনের ব্যাবস্থা অব্যাহত রয়েছে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন