অদম্য উদ্যোক্তার নাম সন্ধা রানী....



বানারীপাড়ায় হার না মানা এক জীবন সংগ্রামী নারী সন্ধ্যা রাণী। একসময় এ নারীর পরিবারে দারিদ্রতা ছিলো নিত্য সঙ্গী। অনাহারে অর্ধাহারে জীবন চলতো তাদের। অদম্য ইচ্ছে শক্তি, নিরলস পরিশ্রম ও আত্ম প্রত্যয় সন্ধ্যা রাণীর জীবনের দারিদ্রতা নামক অমানিশার ঘোর অন্ধকার কেটে আলোময় করে দিয়েছে। ১৯৭৩ সালে তিনি পূর্ব অভিজ্ঞতা ও প্রশিক্ষণ ছাড়াই এলাকায় শামুক কুঁড়িয়ে তা পুড়িয়ে হাতে খাবার চুন তৈরী করার কাজে নিয়োজিত হন। এভাবে চুন তৈরী করে তা বিক্রি করে ২ বেলা খেয়ে না খেয়ে কোন ভাবে চলতো তাদের সংসার।
২০০০ সালে সন্ধ্যা রানী বানারীপাড়া পৌর শহরের ৫ নং ওয়ার্ডে বিডিএস পরিচালিত ‘করবী’ মহিলা সমিতিতে ভর্তি হয়ে প্রথমে ১৫ হাজার টাকা ঋন নিয়ে চুন প্রস্তুতের পরিধি বৃদ্ধি করেন। এরপর আর সন্ধ্যা রানীকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বিডিএস থেকে ধাপে ধাপে ঋনের সিলিং বৃদ্ধি করতে থাকেন। সেই সাথে কারখানায়ও আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন করেন। সন্ধ্যা রাণী বিডিএস থেকে ১৬ দফায় ৭ লাখ টাকা ঋন গ্রহণ করেন। বর্তমানের তার ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ঋন চলমান রয়েছে। সন্ধ্যা রানীর তিন ছেলে ও স্বামী এ ব্যবসার সাথে জড়িত।
সন্ধ্যা রাণী জানান, প্রথমে শামুক এনে স্তুপ করে রাখেন এবং পরে তা পুড়িয়ে গুড়া করে বিশেষ পদ্ধতিতে চুন তৈরী করেন। ৪ হাজার পিস শামুকের মূল্য ৫শত টাকা যা পুড়লে ৪০ কেজি গুড়া তৈরী হয়। ৪০ কেজি শামুক গুড়ার মূল্য ১২ শত টাকা। ৪০ কেজি গুড়া গুলিয়ে ২০০ কেজি খাবার উপযোগী চুন তৈরী করা যায়। যার বাজার মূল্য ২২০০ থেকে ২৫০০ টাকা। সব খরচ বাদ দিয়ে ৪০ কেজি শামুক গুড়া দিয়ে ২০০ কেজি খাবার চুন তৈরী হয় যা থেকে ৭/৮ শত লাভ থাকে। তিনি আরো জানান, প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ মন খাবার উপযোগী চুন প্রস্তুত করা সম্ভব হয়। যা থেকে লাভ থাকে প্রায় ২৫ শত থেকে ৩ হাজার টাকা। সন্ধ্যা রানীর আর্থিক অবস্থার ইতবাচক পরিবর্তণ লক্ষ্যনীয়।একান্নবর্তী পরিবারটি আর্থিকভাবে বর্তমানে খুবই ভাল আছেন।
তিনি ইতিমধ্যে জরাজীর্ণ বসত ঘর ভেঙ্গে একটি বড় ধরণের আধাপকা ভবন নির্মাণ করেছেন। কারখানার যন্ত্রপাতি ক্রয় ও শামুক পরিবহনের জন্য বড় ধরণের ট্রলার ক্রয় করেছেন। বিডিএসএ তার সঞ্চয় জমা আছে ২৫ হাজার টাকা। ব্যাংকেও রয়েছে ডিপিএস। সন্ধ্যা রাণী এলাকায় একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিতি অর্জণ করেছেন। তার কারখানায় পরিবারের ৪/৫ জন ছাড়াও খন্ডকালীণ আরো কয়েকজন শ্রমিক নিয়োজিত থাকেন।
সন্ধ্যা রাণীর এ সাফল্য সম্পর্কে বিডিএসএর বানারীপাড়ার সিনিয়র শাখা ব্যবস্থাপক এটিএম মোস্তফা সরদার এ প্রতিবেদককে বলেন কঠোর পরিশ্রম, সততা, নিষ্ঠা ও একাগ্রতা ভাগ্যের চাকা ঘুড়িয়ে সন্ধ্যা রানীকে আজকের এ অবস্থানে নিয়ে এসেছে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অাগরা শাক মানুষের জন্য ক্ষতিকর .....!

Mia Khalifa মিয়া খলিফা sex সমাচার

থানকুনি পাতার স্বাস্থ্য উপকারিতা কি....?