ভালো অাছি ভালোবাসা নিয়ে ...
ভালবাসা সম্ভবত পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্লভ আর আকাঙ্খিত একটি আবেদন। ঠিক কবে ভালবাসার উৎপত্তি তা জানা সম্ভব না হলেও এতটুকু ভেবে নেয়া যায়যে এর ইতিহাস বিবর্তনের চেয়েও আদিম ও পুরোনো। প্রাণীজগতের অন্যান্য সব প্রাণের মাঝে ভালবাসা পরিলক্ষিত হলেও মানুষ যেভাবে একে জীবন ও প্রেরণার অনুষঙ্গ করেছে তা আর কেউ পারেনি।
ভালবাসা নামের এই অজানা অদেখা আর চাপা কষ্টের সেই অব্যাক্ত অনুভুতিকে মহিমান্বিত করতেই নাকি প্রতি বছরের একটি বিশেষ দিনকে ঘোষণা করা হয়েছে ‘ভ্যালেন্টাইন্স ডে’ যার বাংলায় মানে দাঁড়ায় ভালবাসা দিবস। পাশ্চাত্যের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী দিনটি ১৪ ফেব্রুয়ারি, মানে ঠিক ফাল্গুনের ২য় দিনটিতে।
আমার মতো অনেকেই বলে অত ভালবাসা দিবসের প্রয়োজন কি? প্রতিটি দিন হোক ভালবাসা দিবস। একটু খোঁজ নিলেই দেখা যাবে, এরও এক পুরোনো ইতিহাস আছে?কেন এই ‘ভ্যালেন্টাইন্স ডে’ ? আর কবে থেকেই এই দিবসের এর শুরু ? কেই বা ছিলেন ভ্যালেন্টাইন ? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পেতে হলে ইতিহাসের পথে পেছনে হাঁটতে হবে কয়েক শতাব্দী। ভালবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে অনেক গল্পই প্রচলিত আছে। আজ ভালবাসা দিবসের সবচেয়ে প্রচলিত দুটো গল্পের সঙ্গে সবাইকে পরিচয় করিয়ে দেব।
গল্পটি হলো, সেন্ট বা সন্তো ভ্যালেন্টাইন নামের এক রোমান ক্যাথলিক ধর্মযাজক ছিলেন৷ তিনি ধর্মযাজক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছিলেন চিকিৎসকও৷ সে সময় রোমানদের সম্রাট ছিলেন দ্বিতীয় ক্লডিয়াস৷ হয়েছে কি, বিশ্বজয়ী রোমানরা একের পর এক রাষ্ট্র জয় করে চলেছে৷ আর যুদ্ধের জন্য প্রয়োজন শক্তিশালী সেনাবাহিনী৷ কিন্তু, সমস্যা দাঁড়ায় তরুণীদের নিয়ে৷ তারা যে কিছুতেই তাদের পছন্দের পুরুষটিকে যুদ্ধে পাঠাতে চায় না৷ তখন সম্রাট ক্লডিয়াস মনে করলেন, পুরুষরা বিয়ে না করলেই বোধ হয় যুদ্ধে যেতে রাজি হবে৷ ভাবনাটার বাস্তবায়ন করলেন তিনি। বিয়ে নিষিদ্ধ করলেন সম্রাট৷ কিন্তু ভালবাসার তাড়নায় ছুটে চলা তারুণ্যকে কি আর আইন করে বেধে রাখা যায়? এগিয়ে এলেন সেন্ট বা সন্তো ভ্যালেন্টাইন৷ তিনি নিজে সকল প্রেমে আবদ্ধ তরুণ -তরুনীদের এক করার ব্যবস্থা করলেন, বিয়ে দিলেন সবাইকে। কিন্তু সেই প্রথা বেশি দিন তার ধারা বজায় রাখতে পারলো না৷ ধরা পড়লেন ভ্যালেন্টাইন৷ তাঁকে বন্দী করা হলো৷ কিন্তু, তখন নতুন করে আরেকটা সমস্যা দেখা দিল৷ তার অনেকে ভক্তরাই ভ্যালেন্টাইন’কে দেখতে কারাগারে যেতেন৷ দিয়ে আসতেন তাদের অনুরাগের চিহ্ন হিসেবে অনেক ধরনের ফুলের শুভেচ্ছা৷ তাদের মধ্যে একটি অন্ধ মেয়েও ছিল৷ শোনা যায়, সেন্ট ভ্যালেন্টাইন তার অন্ধত্ব দূর করেন৷ শুধু যে তার দৃষ্টি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তাই নয়, সঙ্গে মেয়েটির প্রেমে আবদ্ধ হয়ে ধর্মযাজকের আইন ভেঙে তাকে বিয়েও করে জীবনসঙ্গী করেন তিনি৷ কিন্তু তারপর? এমন একটা খবর রাজার কানে পৌঁছোতেই তিনি ভ্যালেন্টাইনের মৃত্যুদন্ডের আদেশ দেন৷ ফাঁসির মঞ্চে যাওয়ার আগে, প্রিয়াকে লেখা ভ্যালেন্টাইনের শেষ চিঠিতে ছিল – ‘লাভ ফ্রম ইউর ভ্যালেন্টাইন’৷ আর সেই দিনটিও ছিল ১৪ই ফেব্রুয়ারি৷ ৪৯৬ খ্রিস্টাব্দে পোপ গেলাসিয়াস প্রথম এই দিনটিকে ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’ হিসেবে ঘোষণা করেন৷ ১৭০০ শতাব্দীতে দিনটিকে জনপ্রিয়ভাবে পালন শুরু করে ব্রিটেন৷ শুরু হয় হাতে লেখা কার্ড অথবা উপহার বিনিময়৷ এরপর ১৮৪০ সালে বাণিজ্যিকভাবে প্রথম ‘ভালবাসা দিবস’-এর উপহার তৈরি শুরু করেন এস্থার এ হাওল্যান্ড৷ উল্লেখ্য, পৃথিবীর সবচেয়ে পুরনো ‘ভ্যালেন্টাইন কার্ড’-টি সংরক্ষিত আছে লন্ডনের ব্রিটিশ মিউজিয়ামে৷
#bloggermonju___post
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন