গরমে কিছুটা পরামর্শ মেনে চলুন....!


গরমে অারাম বা প্রশান্তি পাবার জন্য কাপর,খাদ্য পানিয়,গোসল সহ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। বাংলাদেশ ষড় ঋতুর দেশ। এখন গ্রীষ্মকাল। জৈষ্ট্যের প্রচন্ড গরমে ও আদ্রতায় জনজীবন অতিষ্ট। প্রচন্ড সূর্যরশ্মির কারণে স্বাস্থ্য সমস্যা বেড়ে যায়। ডায়রিয়া, হজমের ব্যাঘাত, বমি, জ্বর ও পানি স্বল্পতা, অনেক ক্ষেত্রে হিটস্ট্রোক দেখা দেয়। গরমে সুস্থ থাকার জন্য সঠিক খাদ্য নির্বাচন বা অত্যবশ্যকীয় খাবারের উপস্থিতি শরীরকে সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখতে পারে। গরমে প্রচুর ঘামের কারণে শরীর থেকে প্রচুর পানি ও লবণ বের হয়ে যায়। ফলে পানি স্বল্পতা দেখা দেয়। শরীরের স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে পানির প্রয়োজন। তাই শরীরের পানির স্বল্পতা রোধ করতে দিনে কমপক্ষে আট থেকে দশ গ্লাস পানি পান করা প্রয়োজন। তৈলাক্ত ও অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার, রাস্তার খোলা খাবার, বিভিন্ন আকৃষ্ট পানীয় (খোলা শরবত, কাটা ফল, আখের রস) থেকে এড়িয়ে চলতে হবে। কেননা এসব খাবার হজমে ব্যাঘাত, বমি, ডায়রিয়া, পানিবাহিত রোগ, জন্ডিস, টায়ফয়েড, হেপাটইটিস ইত্যাদি রোগ দেখা দিতে পারে। ক্যাফেইন সমৃদ্ধ খাবার চা-কফি, কোমল পানীয় ইত্যাদি যথা সম্ভব কম খাওয়া প্রয়োজন। এ ঋতুতে নানা রকম মৌসুমী ফল যেমন- আম, কাঠাল, লিচু, তরমুজ, আনারস, জামরুল ইত্যাদি ও নানা জাতের সবজি লাউ, পেপে, পটল, জিংগে করলা, চিচিংগা ইত্যাদি পাওয়া যায়। খাদ্য তালিকায় এসব খাবার থাকা দরকার। তাছাড়া ডাবের পানি ও লেবুর শরবত ইত্যাদিও বেশী করে খাওয়া দরকার। গ্রীষ্মকালে সূর্য অস্ত যায় দেরীতে। তাই দিন বড়। বেশীরভাগ সময় ঘরের বাহিরে থাকতে হয়। প্রচুর ঘামের কারণে শরীর থেকে পানির সাথে প্রচুর পটাশিয়ামও বের হয়ে যায়। তাই এ সময় প্রচুর পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার যেমন- মিষ্টি কুমড়া, টমেটো, সজনে ডাটা, শসা, মাসরুম বিভিন্ন প্রকার শাক, ডাল, মাছ, মাংস ইত্যাদি খাদ্য তালিকায় থাকা প্রয়োজন। গরমের দিনে প্রতি বেলার খাদ্য তালিকায় বিভিন্ন রঙ্গীন ফল ও সবজি যেমন-টমেটো, শসা, আপেল, মাল্টা, আংগুর ইত্যাদি মিলিয়ে সালাদ করা যায়। সালাদ খাদ্যের স্বাদ বৃদ্ধি করে এবং প্রয়োজনীয় পুষ্ঠির চাহিদা পূরণ করে । খাবার যেন টাটকা বা তাজা হয়। বাসী খাবার শরীরে রোগ বৃদ্ধি করে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয়। গরমের দিনে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় খুব তাড়াতাড়ি খাবার নষ্ট হয়ে যায়। তাই পরিমিত পরিমাণে খাবার রান্না করতে হবে যাতে বাসী খাবার না থাকে। ফলে খাবারের অপচয় হবে না। পাশাপাশি টাটকা খাবার খেয়ে পুষ্টি উপাদান পাওয়া যাবে। গরমের দিনে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে রোগ প্রতিরোধকারী খাদ্য যেমন- সবুজ ও টক জাতীয় খাবার যেমন-পেয়ারা, কামরাঙ্গা, লেবু, কাঁচা আমের শরবত, শসা, পুদিনা পাতা, ধনে পাতা, লেটুস পাতা, সবুজ ও রঙ্গিন শাক সবজি, চীনা বাদাম, কাজু বাদাম, পেস্তা বাদাম (উচ্চ রক্তচাপ না থাকলে), লেবুর চা ইত্যাদি খাবার গ্রহণ করা যায়। গরমের দিনে একসাথে বেশী খাবার না খেয়ে বার বার অল্প অল্প করে খাবার খেতে হবে। গরমের দিনে টক দই খুবই উপকারী। গরমে নানা ভাবে যেমন- দই-চিড়া, দই, মুড়ি, কলা, দইয়ের লাচ্ছি ইত্যাদি খাওয়া যায়। গরমে উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার, লাল আটার রুটি, বিভিন্ন ধরনের সবজি যেমন-বরবটি, শসা, সাজনা, পটল, মিষ্টি কুমড়া, শাক ইত্যাদি ও নানা রকম ফল যেমন-পেয়ারা, জাম, আংগুর ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় আঁশের পরিমাণ বেশী থাকলে কৌষ্টকাঠিন্য, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখা যায়। গরমের দিনে জনজীবন যখন অতিষ্ট একটু সচেতন হয়ে খাদ্য তালিকায় উপরোক্ত খাদ্য রাখা গেলে স্বাস্থ্য বা শরীরকে সুস্থ, সুন্দর ও কর্মক্ষম রাখা যায়। গরমের সময় তিনবেলা কী কী খাবার খাওয়া প্রয়োজন, পাঠকদের জন্য সে পরামর্শ দিয়েছেন বারডেম হাসপাতালের প্রধান পুষ্টি কর্মকর্তা আখতারুন নাহার। তিনি বলেন, সকালের খাদ্যতালিকায় থাকা উচিত ভাত, আটার রুটি, ডিম, হালকা তেল দিয়ে ভাজা সবজি। এ ছাড়া যাঁরা চিড়া খেতে পছন্দ করেন, তাঁরা কলা ও দই-চিড়া খেতে পারেন। এতে পেট ঠান্ডা থাকবে। দুপুরে খিচুড়ি ও পোলাও তৈলাক্ত জাতীয় খাবার না খেয়ে সাদা ভাত খাওয়া উত্তম। সঙ্গে পাতলা ডাল, ঝোল দিয়ে রান্না করা মাছ, টক দই দিয়ে সালাদ, শাক-সবজি থাকতে পারে। কেউ চাইলে রুচি আনার জন্য যেকোনো একটি চাটনি খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন। রাতের ও দুপুরের খাদ্যতালিকা একই হবে। তবে রাতে কিছুটা কম খাওয়া উচিত। খাওয়ার পর মৌসুমি ফল যেমন আম, তরমুজ ও জামরুল ইত্যাদি খাওয়া উচিত। শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিদের খাদ্যতালিকা আলাদা বলে জানালেন আখতারুন নাহার। শিশুদের জন্য বাইরের খাবার যথাসম্ভব এড়িয়ে চলাই ভালো বলে মত দিলেন তিনি। পাতলা পায়েস বা সুজি খাওয়ানোর পরামর্শ দিলেন। বললেন, পানির অভাব পূরণে শিশুদের দিনে অন্তত একবার লেবু, মাল্টা, কমলা বা অন্য ফলের রস খাওয়ানো উচিত। সকালে যে সব শিশু রুটি খেতে চায় না, তাদের জেলি দিয়ে পাউরুটি দেওয়া যেতে পারে। গরমে অতিষ্ঠ হয়ে অনেকে দিনে চার থেকে পাঁচবারও গোসল করে থাকেন। তবে দিনে দুবারের বেশি গোসল করা ত্বকের জন্য ক্ষতিকর বললেন আখতারুন নাহার। বার বার গোসল না করে সারা দিনে কয়েকবার হাত-মুখ ধোয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। তবে ক্লান্তি ও পরিস্কার থাকতে একাধিক বার গোসল করাযাবে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অাগরা শাক মানুষের জন্য ক্ষতিকর .....!

Mia Khalifa মিয়া খলিফা sex সমাচার

থানকুনি পাতার স্বাস্থ্য উপকারিতা কি....?