এরিষ্টটল এর জীবনী







এরিষ্টটল ৩৮৪ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে মেসিডনিয়ার নিকটবর্তী স্ট্যাগিরা নামক স্থানে জন্মগ্রহন করেন। তাঁর পিতা নিকোম্যাকাস ছিলেন মেসিডনিয়ার রাজ দরবারের একজন চিকিৎসক। চিকিৎসকের পারিবারিক পরিবেশেই তার শৈশব ও কৈশর কালের অতিক্রমন ঘটে। ৩৬৭ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে ১৮ বছর বয়সে তিনি এথেন্স যান এবং প্লেটোর ‘একাডেমিতে’ পড়াশোনা শুরু করেন। প্লেটোর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত অর্থাৎ ৩৪৭ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত দীর্ঘ বিশ বৎসর তিনি প্লেটোর একাডেমিতে শিক্ষা লাভ করেন। এরপর এথেন্স নগরী ত্যাগ করে এশিয়া মাইনরে চলে যান। সেখানে তিনি গবেষণা করেন সামুদ্রিক জীবজন্তু নিয়ে। পরবর্তিতে তিনি আলেকজান্ডারের গৃহশিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন। কিন্ত আলেকজান্ডার যখন দেশ বিজয়ে বের হন তখন তিনি পুনরায় এথেন্সে প্রত্যাবর্তন করেন। ৩৩৫ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে এরিষ্টটল তার নিজস্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘লাইসিয়াম’ প্রতিষ্ঠা করেন। এই লাইসিয়ামে সাধারনত বাস্তব গবেষনার উপর জোর দেয়া হত। বস্তত ঞ্জান ও গবেষনার সংগঠক এরিষ্টটল দস্তুর মত একটি জীব গবেষনাগার তৈরি করেছিলেন। বিভিন্ন রাষ্ট্রের শাসন ব্যবস্থার পরিচয় লাভের জন্য এরিষ্টটল ১৫৮ টি রাষ্টের সংবিধান ও শাসন ব্যবস্থার তথ্য সংগ্রহ করে সংবিধানের একটি গ্রন্থাগারও তার লাইসিয়ামে গড়ে তোলেন।
অবশেষে ৩২২ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে ৬৩ বছর বয়সেই তিনি মৃত্যু বরন করেন।






    এরিষ্টটল অনেক বিখ্যাত গ্রন্থ লিখেছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু গ্রন্থ হচ্ছে-
         *The Politics;
         *The Ethics;
         *The Constitution of Athens;
         *The Megna Moralia;

    Politics গ্রন্থে রাষ্ট্র সম্পর্কিত যাবতীয় চিন্তার পূর্নবিকাশ সাধিত হয়েছে। আটটি পুস্তক সমন্বয়ে রচিত এই গ্রন্থের বিষয় ও পুস্তক বিন্যাস যথেষ্ট বিভ্রান্তিকর। এই বিভ্রান্তির কারনে অনেকে মনে করেন যে, Politics এর বর্তমান পান্ডুলিপির বিন্যাস এরিষ্টটল নিজ হাতে করেননি। প্রধানত এই কারনেই Politics কে অসম্পুর্ন গ্রন্থ বলে মনে করা হয়। Politics গ্রন্থে দেখা যায়, রাষ্ট্র সম্পর্কে তিনি বিভিন্ন পুস্তকে আলোচনা করেছেন যা সুস্পষ্ট ভাবে বিন্যাস হয়নি। Politics পুস্তকের বিন্যাসের এই এলোমেলো ক্রমের প্রধান কারন হল, তিনি তার গ্রন্থ খানি সাধারন্যে প্রকাশ করার উদ্দেশ্যে রচনা করেননি। প্রকাশনার উদ্দেশ্যে তিনি যদি তার পান্ডুলিপিটি পুনঃ পর্যালোচনা করার সুযোগ পেতেন তাহলে সম্ভবত বিন্যাসের এই ত্রুটি থাকত না এবং তাতে পাঠক সমাজের অসুবিধার কোন কারন হত না।

    এরিষ্টিটল ছিলেন একজন বাস্তববাদী দার্শনিক। তিনিই প্রথম রাজনৈতিক অধ্যয়নকে বিঞ্জান পদবাচ্য করে তোলেন। এরিষ্টটল যখনই যে সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছিলেন তখনই তাকে ইতিহাস ও বাস্তব অভিঞ্জতার প্রেক্ষিতে যাচাই করেছেন। বস্তুত তার Politics গ্রন্থটি মূলত প্রায় দেড় শতাধিক রাষ্ট্রের বাস্তব শাসন ব্যবস্থার পর্যালোচনলব্ধ অভিঞ্জতার ভিত্তিতে গঠিত হয়। এরিষ্টটলের পদ্ধতি ছিল মূলত আরোহ প্রকৃতির (Inductive)। এই পদ্ধতির মূল কথা হল প্রথমে একটা প্রকল্প বা অনুমান গ্রহণ করা এবং পরে থাকে প্রতিষ্ঠিত করার উদ্দেশ্যে নানা প্রকার তথ্য সংগ্রহ করা। এগুলো পর্যবেক্ষন ও বিশ্লেষন করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। তিনি ইতিহাস সমর্থিত ঘটনা সমূহের তুলনামূলক (Comparative) বিশ্লেষনের পদ্ধতি অনুসরন করেন। এরিষ্টটল অনুসৃত পদ্ধতিকে অভিঞ্জতামূলক (Empirical) পদ্ধতিও বলা যায়। তাছাড়া এরিষ্টটল তার অনুসৃত পদ্ধতিতে উদ্দেশ্যবাদের (Teleology) উপর যথেষ্ট গুরুত্ত আরোপ করেন।

    যেহেতু ‘The Politics” গ্রন্থের পুস্তক বিন্যাস এলোমেলোভাবে সাজানো, তাই আমরা পুস্তক অনুসারে পর্যালোচনা না করে বিষয়বস্তু অনুসারে পর্যালোচনা করছি। Politics গ্রন্থে রাষ্ট্রের প্রকৃতি, রাষ্ট্রের উদ্ভব, তার উপাদান, রাষ্ট্রের অধিবাসীদের শ্রেনীবিভাগ, তার শাসন ব্যবস্থার সংবিধান, শাসন ব্যবস্থার প্রকারভেদ, শাসক ও শাসিতের সম্পর্ক, শাসক ও নাগরিকের সংঞ্জা, দাসব্যবস্থের পক্ষে যুক্তি প্রদান, রাষ্ট্রের শাসন ব্যবস্থার অস্থিরতা, বিদ্রোহ ও বিপ্লবের সম্ভাব্য কারন এবং সে কারন প্রতিরোধের উপায়- এই সমস্ত বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
 
এরিষ্টটল রাষ্ট্র ও সংবিধান বলতে এক জিনিস বুঝিয়েছেন। সংবিধানের সংঞ্জা নির্দেশ করতে গিয়ে তিনি বলেন, সংবিধান হচ্ছে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতা সমূহের বিন্যাস ব্যবস্থা। Politics গ্রন্থের ১ম পুস্তকের ১ম অধ্যায়ে বলা হয়েছে, সংস্থা মাত্রই লক্ষ সেখানে কোন উত্তম সাধন করা, সেখানে সে সংস্থা সকল সংস্থার সেরা এবং অপর সকল সংস্থা সে সংস্থার অন্তর্গত, সে সংস্থার লক্ষ হচ্ছে চরম উত্তমের সাধন এবং এরুপ সংস্থাকে আমরা রাষ্ট্র বলে অভিহিত করি। তার মতে সংবিধানের পরিবর্তন রাষ্ট্রের পরিবর্তন সূচিত করে। 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অাগরা শাক মানুষের জন্য ক্ষতিকর .....!

থানকুনি পাতার স্বাস্থ্য উপকারিতা কি....?

Mia Khalifa মিয়া খলিফা sex সমাচার